বিদেশ : একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় উত্তর অস্ট্রেলিয়ার দিকে ধেয়ে আসছে। এতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে জানিয়েছে, গতকাল শনিবার দেশটিতে ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানবে। তীব্র গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ফিনা গতকাল শনিবার সকালে ব্যস্ত ডারউইন শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার (৮৬ মাইল) উত্তর-পূর্বে অবস্থান করছিল। এই শহরে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ মানুষের বাস। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। স্থানীয় বাসিন্দারা সন্ধ্যা নাগাদ ৩ নম্বর ক্যাটাগরির এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার আশঙ্কায় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এ সময় সুপারমার্কেটে তাদের কেনা কাটায় দোকানের সেল্ফগুলো খালি হয়ে যায়। নর্দার্ন টেরিটরি স্যালভেশন আর্মির পিটার স্যাম্পসন বলেন, শহরের একটি গৃহহীন আশ্রয়স্থল রেড শিল্ড হাউস ৪৯-এ এক সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। জাতীয় সমপ্রচারক এবিসিকে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের অনেকেই এই আশ্রয় শিবিরে আসেন। এখানে তাদের থাকা ও খাওয়ার জন্য চমৎকার সুবিধা রয়েছে এবং তাদের দেখাশোনার জন্য নিয়োজিত রয়েছে সুপ্রশিক্ষিত সদস্যরা।’ অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডারউইন উপকূল থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূরে অবস্থিত জনবহুল তিউই দ্বীপপুঞ্জ। এই দ্বীপপুঞ্জ ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ণ শক্তির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এখানে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া ব্যুরোর পূর্বাভাসকারী অ্যাঙ্গাস হাইন্স গতকাল শনিবার বলেছেন, ‘ঝড়ের প্রভাবে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হবে এবং খুব শক্তিশালী বাতাস বইবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে খারাপ বাতাস এখনও তৈরি হচ্ছে এবং গতকাল শনিবার শেষ নাগাদ বা রাতের আগে ঝড়ের আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই।’ অ্যাঙ্গাস হাইন্স বলেন, ‘আমাদের মনোযোগ উত্তরাঞ্চলে ডারউইনের দিকে।’ কর্তৃপক্ষ আশা করছে যে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগের খুব কাছে চলে আসলেও সমুদ্রের ওপরই থাকবে আর এর অর্থ, শহরগুলো সবচেয়ে খারাপ ব্যবস্থার প্রভাব এড়াতে পারবে। ডারউইনের কিছু এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাবে ২০০ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। গত কয়েকদিন ধরে এই ঘূর্ণিঝড় উত্তরাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল এবং এটি একটি ক্যাটাগরি ২ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্থলভাগে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তবে গতকাল শনিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আরো অধিক শক্তি সঞ্চয় করায়, আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ এই ঝড়কে আপগ্রেড করতে বাধ্য হয় এবং ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলে ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। গবেষকরা বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে মানব সৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দাবানল, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।