সর্বশেষ :
ফলোআপ: পাইকগাছায় কোটিপতির ভবন রক্ষায় সড়ক সরলীকরণ না হয়ে হচ্ছে বাঁকা: নকশা পরিবর্তন ও মাদ্রাসা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন পাইকগাছায় আমন ধানের ফলন ভাল হলেও ধানের মূল্য কম হওয়ায় কৃষক হতাশ ডেইলি স্টার অফিসে হামলা-ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয় ভাংচুর করে নথিতে আগুন দিলো বিক্ষুদ্ধ জনতা হাদি হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার শাহবাগ অবরোধ চট্টগ্রামে রাতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলা, আটক ৮ ছায়ানটের ভেতরে পোড়া বই আর ভাঙা বাদ্যযন্ত্র, বাইরে কড়া পুলিশ পাহারা আজ সন্ধ্যায় দেশে আসবে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ, জানাজা শনিবার জব্দ রুশ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা লুকানো কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বাড়াচ্ছে ইউক্রেন
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সুহার্তোকে ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা, ইন্দোনেশিয়ায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ

প্রতিনিধি: / ৪০ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিতর্কিত শাসক সুহার্তোকে ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দীর্ঘদিনের এই সামরিক শাসকের গায়ে স্বৈরাচারের দাগ থাকায় সরকারে সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে জাকার্তা ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
প্রতি বছর ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা ও উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যেসব ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো হয়, তাদের ‘জাতীয় বীর’ উপাধি দেওয়া হয়। এ বছর গতকাল সোমবার রাজধানী জাকার্তায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো-যিনি সুহার্তোর সাবেক জামাতা-প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টসহ আরও ১০ জনের হাতে সম্মাননা প্রদান করেন। সরাসরি সম্প্রচারে জানানো হয়, ১৯৪৫ সালে জাপানি বাহিনীর নিরস্ত্রীকরণে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছিলেন সুহার্তো।
তবে এই ঘোষণার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। গত সপ্তাহে জাকার্তায় শতাধিক মানুষ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন এবং অনলাইনে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছেন এক প্রতিবাদ পিটিশনে। অ্যামনেস্টি ইন্দোনেশিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই সিদ্ধান্ত ইতিহাস বিকৃত করে সুহার্তোর স্বৈরাচারী অপরাধকে বৈধতা দেওয়ার এক স্পষ্ট প্রয়াস।”
১৯৬৫ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সুহার্তো তিন দশকেরও বেশি সময় দেশ শাসন করেন। তার ‘নিউ অর্ডার’ আমলে ইন্দোনেশিয়ায় দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটলেও, একই সময়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও রাজনৈতিক দমনপীড়নের অভিযোগ ওঠে। ধারণা করা হয়, ১৯৬৫-৬৬ সালে কমিউনিস্ট সন্দেহে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়। বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম, নির্যাতন এবং সংবাদপত্রের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ছিল সেই সময়ের বাস্তবতা।
অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সুহার্তোর নীতিগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে স্বীকার করেন বিশ্লেষকেরা। তার সময়েই ইন্দোনেশিয়ার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি গড়ে সাত শতাংশে পৌঁছায় এবং ১৯৬৬ সালে ৬০০ শতাংশের মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ১০ শতাংশে। তবে তার সরকারের বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ এখনো জনমনে রয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালে এশীয় আর্থিক সংকটের সময় দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের মুখে সুহার্তো পদত্যাগ করেন এবং তুলনামূলক শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ২০০৮ সালে ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। এরপর থেকেই তার সমর্থকেরা তাকে জাতীয় বীর ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিলেন, যা অবশেষে বাস্তবে রূপ পেল।
তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, প্রাবোও সুবিয়ান্তোর হাতে তার সাবেক শ্বশুরকে এই উপাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং ইতিহাসের এক গভীর বিতর্ককে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।


এই বিভাগের আরো খবর