আনন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ছয় বছরের শিক্ষার্থীর গুলিতে গুরুতরভাবে আহত হওয়া এক শিক্ষিকাকে ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার রায় দিয়েছেন আদালত। এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকা অবস্থায় শিক্ষিকা অ্যাবি জোয়ারনার (২৮) গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রাণঘাতী জখম নিয়ে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। গত বৃহস্পতিবার জুরি বোর্ড রায় ঘোষণা করে জানায়, রিচনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক ইবোনি পার্কার শিক্ষার্থীর কাছে অস্ত্র থাকার বিষয়ে বারবার সতর্কবার্তা পাওয়ার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। ফলে এই ঘটনা ঘটতে দেয়া হয়েছিল বলে আদালত মনে করেছে। অ্যাবি জোয়ারনার ওই সহকারি প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে মোট ৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন, তবে জুরি বোর্ড ১০ মিলিয়ন ডলার প্রদানের রায় দিয়েছে। ২৮ বছর বয়সী জোয়ারনার ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তার প্রথম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর সময় গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে প্রায় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়। প্রয়োজন হয় ছয়টি অস্ত্রোপচারের। এখনও তার বাম হাত পুরোপুরি ঠিক হয়নি। গুলিটি তার হৃদযন্ত্র অল্পের জন্য এড়িয়ে গেলেও এখনও তা তার দেহে রয়ে গেছে। তার আইনজীবী ডায়ান টোসকানো বলেন, ‘এই রায় স্পষ্ট বার্তা দেয় যে স্কুলে নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। যে অবহেলা ঘটেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ আইনজীবীদের দাবি, স্কুলের বেশ কয়েকজন কর্মী জোয়ারনারকে বলেছিলেন যে ছাত্রটির ব্যাকপ্যাকে একটি বন্দুক রয়েছে। সেই সময় সহকারী অধ্যক্ষ পার্কার কোনো গুরুত্ব দেননি। শিশু অবহেলা এবং আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জুয়ারনারকে গুলি করা ছাত্রের মাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে চার বছরের। তবে, শিশুটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। তদন্তে জানা যায়, শিশুটি বাড়িতে একটি ড্রয়ারে উঠে মায়ের ব্যাগ থেকে বন্দুকটি নিয়ে এসেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করা সংগঠন নিউটাউন অ্যাকশন অ্যালায়েন্স বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ৭৬ শতাংশ স্কুলশুটিংয়ে ব্যবহৃত অস্ত্র শিক্ষার্থীদের নিজের বা আত্মীয়দের ঘর থেকেই পেয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে ছোট শিশুদের দ্বারা অস্ত্র ব্যবহারের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে, তবে ১০ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনা অত্যন্ত বিরল। অ্যাবি জুয়ারনার এখন আর শিক্ষকতা করেন না এবং জানিয়েছেন তিনি আর এই পেশায় ফিরবেন না। তিনি বর্তমানে একজন লাইসেন্সধারী কসমেটোলজিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।