বিদেশ : সুদানের কেন্দ্রীয় কর্দোফান অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর আল-ওবাইদে একটি জানাজায় আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর ড্রোন হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে। গতকাল বুধবার জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটির আল-ফাশার শহরে আরএসএফ-এর সামপ্রতিক হামলায় শত শত বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পর নতুন করে এই হামলার খবর এলো। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস বলেছে, ‘কোরদোফান অঞ্চলেও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে।’ কর্দোফান রাজ্যে সরকার বলেছে, গ্রামের একটি জানাজার তাঁবু লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। নিহত ৪০ জনের মধ্যে শিশু ও নারীও রয়েছেন। রাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কাছে আবেদন করেছে, তারা অবিলম্বে আরএসএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করুক। আধাসামরিক বাহিনীটি নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে জাতিগত ও বর্ণগতভাবে অপরাধ সংঘটন করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) অনুমান করেছে, অক্টোবরের শেষের দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ কর্ডোফান অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার কারণে ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী আল-ফাশার শহর দখল করে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। আফ্রিকার হর্নে অবস্থিত সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশটি ২০১৯ সালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পতনের পর থেকে সংঘাত এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের চক্রে আটকা পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে চলা জনসাধারণের অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ চাপের পর ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলেও অস্থিরতার এক নতুন যুগের সূচনা হয়। সুদানি সশস্ত্র বাহিনী এবং আরএসএফ-এক সময় আল-বশিরের শাসনব্যবস্থার পতনে মিত্র হিসেবে কাজ করেছিল। এরপর দুই বাহিনীর ক্ষমতার লড়াই ২০২৩ সালের এপ্রিলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নেয়। এই দ্বন্দ্ব জাতিকে পতনের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয়।