সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ শারা আসন্ন নভেম্বরের ১০ তারিখের দিকে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক। এটি হবে মার্কিন রাজধানীতে কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম সরকারি সফর। হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, সফরটি অনুষ্ঠিত হবে নভেম্বরের ১০ তারিখে। বাহরাইনের মানামায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন মানামা ডায়ালগ-এর ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্যারাক বলেন, এই সফরের সময় সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী জোটে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। একজন সিরীয় সূত্র জানায়, সফরটি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, এর আগে কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে সরকারি সফরে যাননি। আহমেদ শারা সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন। গত ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শারা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন, যার মাধ্যমে তার অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যারা আসাদের আমলে দামেস্ককে বয়কট করেছিল। ব্যারাক বলেন, ওয়াশিংটনের লক্ষ্য হলো সিরিয়াকে ২০১৪ সালে গঠিত আইএসবিরোধী জোটে যুক্ত করা। আমরা চাই সবাই এই জোটের অংশ হোক-সিরিয়ার জন্য এটি হবে একটি বড় সুযোগ। একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার নেতৃত্বে ছিলেন শারা, তবে প্রায় এক দশক আগে তার গোষ্ঠী নেটওয়ার্কটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং পরে আইএসের বিরুদ্ধেও লড়াই করে। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট সিরিয়া থেকে আইএসের শেষ ঘাঁটি দখল করে নেয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আইএস পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে সূত্র জানিয়েছে। ব্যারাক আরও জানান, সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উত্তেজনা হ্রাস নিয়ে আলোচনা চলছে এবং দুই দেশ একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে। সিরীয় সূত্র জানিয়েছে, ওয়াশিংটন সফরের আগেই যুক্তরাষ্ট্র চায় সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নিরাপত্তা চুক্তি সম্পন্ন হোক। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্কে আবদ্ধ সিরিয়া ও ইসরায়েল। যদিও গত ডিসেম্বর আসাদ সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ কিছুটা বেড়েছে, তবুও সীমান্ত বিরোধ ও রাজনৈতিক অবিশ্বাস এখনো গভীরভাবে রয়ে গেছে।