জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর বংশাল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত। ঘটনাটির ৪১ ঘণ্টা পর দায়ের হওয়া এ মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় আসামি করা হয়েছে জুবায়েদের টিউশনের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯), তার প্রেমিক মাহীর রহমান (১৯) এবং ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)-কে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার সব নাম-উল্লেখিত আসামিকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন করতেন জুবায়েদ। ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিনি বংশালের নুর বক্স লেনের রৌশান ভিলায় ছাত্রী বর্ষাকে পড়াতে যান। সেদিন সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে ছাত্রী বর্ষা জুবায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠান যে, “জুবায়েদ স্যার খুন হয়ে গেছেন, কে বা কারা তাঁকে খুন করে ফেলছে।”
রাত ৭টার দিকে বিষয়টি জানতে পারেন সৈকত, এবং শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে নিয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা ভবনের সিঁড়ি ও দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ভবনের তৃতীয় তলার সিঁড়িতে উপুড় অবস্থায় পড়ে ছিল জুবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ। সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তার গলার ডান পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, “পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করেই মামলা করেছি। আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো না থাকায় মামলা করতে একদিন দেরি হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই না কোনো নির্দোষ মানুষ ফেঁসে যাক। যারা প্রকৃত অপরাধী, তারাই যেন শাস্তি পায়। পুলিশ দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে, এজন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত। তবে হত্যার পেছনের মূল উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।