জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে সংঘটিত হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা ছাড়া) বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। সোমবার (২০ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে দেশব্যাপী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে সংঘটিত হত্যার অভিযোগে মোট ৮৩৭টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি মামলার বিচারকার্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন ফৌজদারি আদালতে পুলিশ ইতোমধ্যে ১৯টি হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে। এসব মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০০-এর ১০ ধারার বিধান অনুযায়ী বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, হত্যাসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলোর প্রসিকিউশনের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও গতিশীল করতে আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যাসহ গুরুতর অপরাধের সব মামলার পূর্ণাঙ্গ তালিকা সংগ্রহ করবে, যেখানে প্রতিটি মামলার বর্তমান অগ্রগতি উল্লেখ থাকবে।
এছাড়া, যেসব মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে, সেগুলোর প্রসিকিউশন পরিচালনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে কমিটি তা শনাক্ত করবে এবং সমস্যার সমাধানে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সুপারিশ পাঠাবে। মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কমিটি তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও সাধারণ জনগণকে নিয়মিত অবহিত করবে।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালীন সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর মধ্যে যেসব মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে, সেগুলো এই সিদ্ধান্তের আওতাভুক্ত নয়। ওইসব মামলার বিচার ট্রাইব্যুনালেই চলবে।
বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের এই পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন অনেক আইন বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যার বিচার বিলম্বিত হলে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা দুর্বল হতে পারে।