বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকায় সেনবাগ ফোরামের উদ্যোগে দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন, “আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে একটি শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অনেকেই নাকি তাকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে বলেছেন। এমন বক্তব্য দিয়ে তিনি আসলে কী বার্তা দিতে চাচ্ছেন, সেটিই এখন প্রশ্ন। তিনি এই কথা বলে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।”
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “যারা পাহাড়ে এই অশান্তি সৃষ্টি করছেন, যারা আমাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টির জন্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, তারা মূলত জাতীয় নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। কেউ কেউ বলছে, আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ-তারা কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে? অথচ সরকারের আইন উপদেষ্টা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। এসব বিষয় ঘিরে একটি ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
‘পাহাড়ি অঞ্চলে এই অশান্তি কারা সৃষ্টি করছে-তা খুঁজে বের করতে হবে। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা বড় কথা নয় আরও ২৫ বছর থাকাও বড় কথা নয়। শেখ হাসিনা তো ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন, দেশের মানুষ সেটিকে কীভাবে গ্রহণ করেছে, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের মানুষ কী সুখে আছে? তারা কী নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে কিনতে পারছে?’-প্রশ্ন রাখেন জয়নুল আবদিন।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনীতি, ব্যাংকগুলোর অবস্থা-এসবই বিবেচনার বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জয়নুল ফারুক প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন, “এক বছর তিন মাস আপনি ক্ষমতায় আছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সরকার যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা কতটুকু ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন? ব্যাংকগুলোর করুন অবস্থা কেন? আপনি তো একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। আমরা আপনাকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আপনার প্রতি আত্মবিশ্বাস আছে বলেই আমাদের দল এখনো বলে-যেকোনো বিষয়ে আপনার সঙ্গে আছে এবং থাকবে। কিন্তু আপনি যদি বলেন, জনগণ আপনাকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখবে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে-এই পাঁচ বছরও কি গত এক বছরের মতো চলবে? এমন কথা নির্বাচনের তিন মাস আগে বলা ঠিক নয়। পাহাড়ে অশান্তি চলছে, দুর্গাপূজাকে ঘিরে অশান্তির পাঁয়তারা ছিল-এসব বিষয়কে আমলে না নিলেও, এগুলোর পেছনে ষড়যন্ত্র স্পষ্ট। তবে আমি মনে করি না, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করে কেউ সফল হতে পেরেছে।”
তিনি শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে ‘দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বৈরাচারী শাসনের’ অভিযোগ এনে বলেন, দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে জরুরি।