রাজধানীর রামপুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুইজনকে হত্যা ও এক যুবককে গুলি করার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চার পলাতক পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রোববার (১০ আগস্ট) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
পরোয়ানাভুক্ত অন্যরা হলেন— ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান ও সাবেক উপপরিদর্শক তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। মামলার অপর আসামি রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক চঞ্চল চন্দ্র সরকার বর্তমানে গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন। তাকে আগামী ১৭ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, সাইমুম রেজা তালুকদার, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান। শুনানিতে মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এর আগে ৭ আগস্ট প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ফর্মাল চার্জ দাখিল করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আমির হোসেন রাজধানীর বনশ্রী-মেরাদিয়া সড়কে পুলিশ ও বিজিবির উপস্থিতি দেখে ভয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে উঠে পড়েন। পরে কার্নিশে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি চালায়। এতে নিচে পড়ে আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়।
সেদিন একই এলাকায় পুলিশের গুলিতে নাদিম নামের এক ব্যক্তি ও মায়া ইসলাম নামের এক নারী নিহত হন। মায়া ইসলামের ছয় বছরের নাতি বাসিত খান মুসা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও এখনও কথা বলতে পারছে না।
চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তদন্ত শেষে ৩১ জুলাই চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এর ভিত্তিতেই ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারি করে।