বিদেশ : গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গুলি বর্ষণে কমপক্ষে ২৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন। রাফাহ শহরের রেড ক্রস হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের এই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনী হঠাৎ গুলি চালাতে শুরু করে। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আজকের মর্মান্তিক হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে এই হামলা হয়। জিএইচএফ একটি নতুন সংস্থা, যেটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত হয়েছে এবং গাজার বিভিন্ন নির্ধারিত স্থানে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হামাসের বিরুদ্ধে সাহায্য সামগ্রী চুরির অভিযোগ আনার পর ইসরায়েল এই পরিকল্পনা চালু করে। যদিও হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। জিএইচএফ দাবি করেছে, তারা এই সপ্তাহে ২০ লাখ খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে। তবে বিবিসি স্বাধীনভাবে এই দাবি যাচাই করতে পারেনি। এই প্রেক্ষাপটে আজকের হামলা আরও উদ্বেগ তৈরি করেছে, যেখানে অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রতিদিন খাদ্যের আশায় ভিড় করছেন। চলতি বছরের ১৮ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় হওয়া দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করে। হামাসকে লক্ষ্য করে শুরু হওয়া এই অভিযান ক্রমেই সাধারণ মানুষের জন্য মারাত্মক প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ চালায়, যাতে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান এই যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৩৮১ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধ ও আশ্রয়ের তীব্র সংকটের মুখে পড়েছে গাজার লাখ লাখ বাসিন্দা। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, উদ্ধারকারী দলগুলোর পক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই আহতদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, কারণ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যাওয়ার কোনো নিরাপদ পথ নেই। এমন পরিস্থিতিতে গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছেই আবারও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
https://www.kaabait.com