বিদেশ : শিশুদের বিচরণ থাকতে পারে, এমন সব উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে ফ্রান্স। এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, স্কুলের বাইরে, বাস স্টপ ও ক্রীড়া ভেন্যু। গত বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্য ও পারিবারিক মন্ত্রী ক্যাথরিন ভত্রাঁ এ ঘোষণা দেন। প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়। নতুন এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। ধূমপায়ী সংস্কৃতির জন্য পরিচিত ফ্রান্সে সমপ্রতি জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধের বিধিনিষেধ ধাপে ধাপে আরোপ করা হচ্ছে। ওয়েস্ট-ফ্রান্স পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী ভত্রাঁ বলেন, ‘যেখানে শিশু থাকবে, সেখানে তামাক থাকবে না’। তিনি আরো বলেন, যেখানে শিশুদের বিশুদ্ধ বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার অধিকার শুরু হয়, ধূমপানের স্বাধীনতা সেখানেই শেষ। এই নিষেধাজ্ঞা স্কুল চত্বরে ও এর সামনে শিক্ষার্থীদের ধূমপান প্রতিরোধেও কার্যকর হবে। নিয়ম ভাঙলে সর্বোচ্চ ১৩৫ ইউরো (প্রায় ১৫৪ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা ফ্রান্সের ঐতিহ্যবাহী ক্যাফে টেরেসগুলোতে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া সামপ্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ই-সিগারেটও (ইলেকট্রনিক সিগারেট) থাকছে নিষেধাজ্ঞার বাইরে। ফ্রান্সে এরই মধ্যে কর্মস্থল, বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন ও শিশুদের খেলার মাঠে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন অ্যান্টি-স্মোকিং সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আরো বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সের প্রায় ৩৫ শতাংশ নাগরিক ধূমপায়ী, যা ইউরোপের (২৫ শতাংশ) ও বৈশ্বিক গড়ের (২১ শতাংশ) তুলনায় অনেক বেশি। দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ তামাকজনিত কারণে মারা যান। সামপ্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, ৬২ শতাংশ ফরাসি নাগরিক জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধের পক্ষে। সরকারের ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় তামাকবিরোধী কর্মসূচিতে ভত্রাঁ ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার মতোই একটি নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। এতে ২০৩২ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত প্রজন্ম’ গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। তবে অ্যান্টি-টোবাকো সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সরকার এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে। এরই মধ্যে ফ্রান্সের দেড় হাজারেরও বেশি শহর ও গ্রাম নিজেদের উদ্যোগে পার্ক, সৈকত ও স্কি রিসোর্টে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে। মন্ত্রী ভত্রাঁ বলেন, সিগারেটে নতুন করে কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা আপাতত নেই। কারণ অতীতে কর বাড়ানোর পর কালোবাজার চাঙা হয়ে উঠেছিল।
https://www.kaabait.com