দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান ও তার পরিবারের ১৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রোববার (৯ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশনা দেন।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, সামিট গ্রুপ ও তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে দেখা গেছে, আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে অস্বাভাবিক পরিমাণ অর্থ রয়েছে। ১৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৪১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে, যা সন্দেহজনক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
দুদক আরও জানায়, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যেকোনো সময় তুলে ফেলে বিদেশে পাচার বা গোপন করা হতে পারে। তাই, অর্থপাচার প্রতিরোধের জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করে এবং গত বছরের ৭ অক্টোবর বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ আজিজ খান গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভাই। এছাড়া, তিনি সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর মধ্যে একজন হিসেবে পরিচিত।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতে আবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, “আমাদের তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস সন্দেহজনক এবং আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। আদালতের নির্দেশের ফলে অর্থপাচার রোধ করা সম্ভব হবে।”
আদালতের এই আদেশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই অর্থের প্রকৃত উৎস খুঁজে বের করতে এবং অন্যান্য সম্পদের বিষয়ে তদন্ত চলমান থাকবে।
দুদক এই বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে যাতে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ গোপন করতে না পারে বা বিদেশে পাচার করতে না পারে।