আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকেই এই বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে তারিখ পরিবর্তনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
গত বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে, বিশেষ করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর। তবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে (২০১৭-২০২১) দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে ইউক্রেন সংকটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প ও পুতিন উভয়ই বৈঠকের ফলাফলের প্রশংসা করেছেন।
গত মঙ্গলবার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে নিজের ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি পুতিনের সঙ্গে চলতি মাসের মধ্যেই বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন কি না। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘সম্ভবত।’
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, ইউক্রেন সংকট নিয়ে ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষ সম্মেলনের জন্য এখনো নির্দিষ্ট কোনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। তবে উভয়পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই বৈঠক থেকে তাঁর দেশকে বাদ দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের সমাধানে তাঁর দেশকে বাদ দিয়ে কোনো চুক্তি সম্ভব নয়। তবে ট্রাম্প কিয়েভের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জবাবে বলেন, ইউক্রেনের উচিত ছিল তিন বছর আগেই রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসা। এতে হয়তো রাশিয়ার আগ্রাসন এড়ানো যেত।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশ কতটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সূত্র: ক্রেমলিন, বিবিসি, আল-আরাবিয়া।