রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সরকার রায়ের আগে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে না

প্রতিনিধি: / ১৭৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। বুধবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেছেন, অবিলম্বে ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে চাইবে না সরকার। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ তার বড় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তার (শেখ হাসিনা) কোনো জায়গা হবে না, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা হবে না।’

‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকতে পারেন না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা (রাজনৈতিক) মেকানিজম তৈরি করেছে, তারা নিজ স্বার্থে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করেছে।’

শেখ হাসিনা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-সহ বিভিন্ন অপরাধ করেছেন বলে প্রতিনিয়ত অভিযোগ তুলেছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে জোর দাবি উঠছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে দলটির ভাতৃপ্রতীম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ হয়তো ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু তার সরকার এমন কিছু করবে না। কারণ, তারা ‘রাজনৈতিক সরকার নয়’।

হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সরকার হাসিনাকে ফেরত চাইবে বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। আমি মনে করি না যে রায় হওয়ার আগে এটা করার দরকার আছে।’

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ঐকমত্যে’র ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ‘তাদেরকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্থান নির্ধারণ করতে হবে।’

ড. ইউনূস জানিয়েছেন, তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো ইচ্ছে নেই। তার সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখাও চূড়ান্ত করেনি।

এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের কাজ সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব।’

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় ৮০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে, হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নৃশংসতা নিয়ে ভারত যে অভিযোগ করছে তার কোনো সত্যতা নিশ্চিত করেনি মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ‘কিছু ঘটনা’ ঘটেছে এবং ‘খুব অল্প সংখ্যক’ প্রাণহানি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তাদেরকে ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আওয়ামী লীগের অনুসারী হিসেবে টার্গেট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘(আগস্টে হামলার শিকার) অধিকাংশ হিন্দু আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। এটাকে ভিন্ন রূপ দেওয়া হচ্ছে।’

‘আমরা প্রতিবেশী। আমাদের একে অপরের প্রয়োজন। আমাদের মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে, যেমনটি দুই প্রতিবেশীর থাকা উচিত,’ যোগ করেন তিনি।


এই বিভাগের আরো খবর