বিগত বছর স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার অধিনে সেসব প্রশাসনিক বাহিনী বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়েছে ছাত্র-জনতার উপর। তারই প্রেক্ষিতে সারাদেশে এসব বাহিনীর যারা অপকান্ডে লিপ্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে এবং এবং অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী সরকার পতনের পরবর্তী ১১ মাসে সারা দেশে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭৬১টি মামলায় আসামি এক হাজার ১৬৮ পুলিশ সদস্য। তার মধ্যে ৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমন তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর এক প্রতিবেদনে। সোমবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ : কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়।
কিছু কিছু বিভাগীয় পদক্ষেপের বাইরে বাস্তবে পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর জবাবদিহির অগ্রগতি না থাকা-সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার ঘাটতি দেখা গেছে বলে জানায় টিআইবি।
টিআইবির ফেলো শাহজাদা এম আকরাম বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী, হত্যার ইন্ধনদাতা ও নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে মামলা দায়ের হয়েছে। দায়েরকৃত মামলা এক হাজার ৬০২টি (হত্যা মামলা ৬৩৮টি) পতিত সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আনুমানিক ৮৭ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। ৭০ শতাংশ মামলার তদন্তে ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ রয়েছে। ৬০-৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে। এক বছরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরমধ্যে অভিযোগ ৪২৯টি ও মামলা ২৭টি। শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৩ জন। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের আগেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে ধীরগতি আছে। জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের বিচারপ্রক্রিয়া চলমান আছে।
‘শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠিত, বিচার শুরু হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় (১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত) সারা দেশে দায়ের করা প্রায় সব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে’-যোগ করেন শাহজাদা এম আকরাম
এসময় গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান প্রমুখ।