বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বইগুলোর নির্দিষ্ট মানদন্ড প্রয়োজন, যেন ইতিহাস বা তথ্য বিকৃতি না হয়। এই মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান যুব কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘বাঙলার স্থপতি’ গ্রন্থের লেখক অ্যালভীন দীলিপ বাগচীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক বই লেখা হচ্ছে। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে যে বইয়ে ইতিহাস বিকৃতি করা হচ্ছে, মানও ঠিক থাকছে না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বইগুলোর নির্দিষ্ট মানদ- প্রয়োজন, যেন ইতিহাস বা তথ্য বিকৃতি না হয়। বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিবিসি অনলাইনে এক জরিপ করেছিল। যাতে পুরো বিশ্ব থেকে বাঙালিরা অংশ নিয়েছিল। সে জরিপে উঠে এসেছিল বঙ্গবন্ধু সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। হাছান মাহমুদ বলেন, বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটেছিল পাঁচ হাজার বছর আগে। কিন্তু তারা কেউ স্বাধীন ছিল না। খ- খ- দু-একটি রাজ্য স্বাধীন থাকলেও বেশিরভাগই ছিল পরাধীন। তবে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা ছিল। তারা বারবার বিদ্রোহ করেছে। ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, তিতুমীর বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসের উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাজনীতির কবি। তিনি জানতেন কখন কার সামনে কী উপস্থাপন করতে হবে। তিনি জনগণের মনন বুঝতেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিল পাকিস্তান তৈরির পর পরই। কিন্তু সেটা তিনি প্রকাশ করেননি তখন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর তিনি ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এতে পাকিস্তান প্রশাসন ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তাকে আপোশ করতে বলা হলেও তিনি তা করেননি। তিনি তখন বলেছিলেন এই ছয় দফা আগে আওয়ামী লীগের দফা ছিল, কিন্তু এখন এটা জনগণের দফা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ (রোববার) ৭ মে একটি ঐতিহাসিক দিন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এদিন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, তাদের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশে এসেছিলেন। দেশের ইতিহাসে, দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে আজকের দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৭ মে শুধু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস নয়, ৭ মে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের মানসকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ইলারিশ আর. গমেজের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ড. ছাদেকুল আরেফিন মতিন, সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, সহকারী বিশপ থিওটনিয়াস গমেজ প্রমুখ। ‘বাঙলার স্থপতি’ গ্রন্থের লেখক অ্যালভীন দীলিপ বাগচী কানাডা প্রবাসী। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বুরুয়াবাড়ি। তিনি ‘বাঙলার স্থপতি’ বইয়ের সাত খ-ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আগের ও পরের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেছেন।