অর্থনীতি: বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে। তারা রাতদিন মাটির খেলনাসহ হরেক রকমের তৈজসপত্র তৈরি করছেন। এবারের বৈশাখী মেলায় বাজার ধরাই শ্রমিকদের লক্ষ্য। মুন্সীগঞ্জের লোকজ ঐতিহ্য মাটির তৈরি তৈজসপত্র। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে জেলার মৃৎশিল্পীরা রাতদিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রং-বেরঙের তৈজসপত্র তৈরিতে। এঁটেল মাটি ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি হয় বিভিন্ন প্রকারের খেলনাসহ মাটির নানা সামগ্রী। এরপর রোদে শুকানো, আগুনে পোড়ানো ও রং করা। বিভিন্ন ধাপে কাজ শেষ করার পরই বাজারজাতের জন্য মজুত করা হয়। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বংশপরম্পরায় জীবিকা নির্বাহের এ পেশা ধরে রাখা জেলার সব কুমারপল্লিতে চিত্র একই। এত কষ্টের পরও দারিদ্র্য যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না। জেলার পাঁচ শতাধিক কুমার পরিবারের আশা বৈশাখী মেলায় মৃৎপণ্যের বেচাবিক্রি বাড়বে। এক মৃৎশিল্পী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা পরিশ্রম করি, কিন্তু আমাদের পণ্য তেমন একটা বিক্রি হয় না। মূলত প্লাস্টিকের পণ্যের জন্যই আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আমাদের ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার ব্যয়ের পাশাপাশি সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা এর জন্য সরকারের অনুদান কামনা করছি।’ এদিকে পরিবেশবান্ধব মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার জনপ্রিয় করা এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল রহিম বলেন, ‘প্লাস্টিকের জিনিসের জন্য মানুষ মাটির জিনিস ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে। তবে আমি মনে করি, পরিবেশবান্ধব এ মাটির জিনিস ব্যবহার করলে মানুষের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।’ তবে মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ টঙ্গীবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. রাশেদুজ্জামান।
উল্লেখ্য, জেলার অধিকাংশ কুমার পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস বৈশাখী মেলা উপলক্ষে বেচাবিক্রি। কাজেই বর্তমানে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।