কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল আগামী সাত দিনের মধ্যে চালু করার কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজল কবির খান। রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মেট্রোরেল চালু করতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের কাজ চলছে। “এটার (চালু করতে) দুটো সমস্যা ছিল। একটা সমস্যা ছিল যে বোর্ডের সদস্য ছিল না। সেটা আমরা আজই (রোববার) করে ফেলেছি। ওই বোর্ডের একটা সভা হবে কাল (সোমবার)। সভার পরে লাইনগুলো চেক করতে দুই-চার দিন লাগবে। আমাদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাহেব আছেন, তিনি আমাদের সময় দিয়েছেন এটা আগামী সাত দিনের মধ্যে চালু করার চেষ্টা করবেন। আমরা সেখানে যাব, আপনাদেরও আমরা সেখানে আমন্ত্রণ জানাব।” আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনে। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গণআন্দোলনে সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বগ্রহণ করার পর দ্রæত মেট্রোরেল চালুর তাগাদা দেওয়া হয়। গত ১১ অগাস্ট মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মেট্রোরেল পুরোদমে চালুর আগে পরিস্থিতি যাচাই-বাছাইয়ে সোম ও মঙ্গলবার থেকে সপ্তাহজুড়ে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর প্রস্তুতি চলছে। আর পরীক্ষামূলক চলাচল শেষে ১৭ অগাস্ট থেকে তা চালু করতে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু রেল চালুর জন্য কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও শুরু না হওয়ায় গত শনিবার থেকে চলাচল শুরু হচ্ছে না বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানায় ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সেদিন ডিএমটিসিএলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অনিবার্য কারণে মেট্রোরেল পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি। মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া অন্য ১৪টি স্টেশন চালু করে মেট্রোরেল পুনরায় চালানোর জন্য মেট্রোরেল সিস্টেম ও মেট্রোট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আবশ্যক।” ঢাকায় প্রথম মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েক বার নানা কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে। তবে মেট্রোরেল ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা এবারই প্রথম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন। পরের বছরের ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। গত বছরের শেষ দিন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ এখনও চলমান।
https://www.kaabait.com