শেষ হচ্ছে ২০২৪ সাল। প্রতি বছরের মতো এ বছরও অসংখ্য সিনেমার মুক্তি পেয়েছে হলিউডে। প্রত্যাশিত অনেক সিনেমা যেমন বঙ্ অফিসে সফল হতে পারেনি, তেমনি অনেক সিনেমা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আয় করেছে। চলতি বছরে হলিউড সিনেমার সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে সিক্যুয়াল থেকে। বলা যায়, ২০২৪ সাল ছিল সিক্যুয়াল সিনেমার দখলে। বছরজুড়ে তিন প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্য চলেছে। সেরা ১০টি সিনেমার বেশির ভাগই এসেছে ডিজনি, ইউনিভার্সাল কিংবা ওয়ার্নার ব্রুস থেকে। যদিও ২০২৩ সালের সামগ্রিক টিকিট বিক্রির তুলনায় চলতি বছর ৪ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে বিক্রির পরিমাণ। ২০২৩ সালে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ট ডিজনি বেশ কঠিন সময় পার করলেও ২০২৪ সালে বঙ্ অফিসে প্রতিষ্ঠানটি তার হারিয়ে যাওয়া মসনদ পুনরুদ্ধার করেছে। পরপর তিনটি প্রত্যাশিত বিলিয়ন-ডলার ব্লকবাস্টার উপহার দিয়েছে। ‘ইনসাইড আউট ২’ থেকে ১৬৯ কোটি ডলার, ‘ডেডপুল ও ওলভারিন’ থেকে ১৩৩ কোটি ডলার ও ‘মোয়ানা ২’ থেকে ৭১ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছে ডিজনি। জানুয়ারির মধ্যে ‘মোয়ানা ২’র আয়ও ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করবে বলে ধারণা করছেন হলিউডের সিনেমাবোদ্ধারা। ডিজনি ব্যতীত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এ বছর একটাও বিলিয়ন ডলারের সিনেমা দিতে পারেনি। ২০২৪ সাল প্যারামাউন্টের জন্য কিছুটা ভালো ছিল, তবে ডিজনির মতো অসাধারণ নয়। ‘গ্ল্যাডিয়েটর ২’ সিনেমাটির আয় ছিল ৪০ কোটির বেশি। কিন্তু এর পেছনে খরচও ছিল বিশাল। এ সিনেমার বাইরে কম খরচে কিছু সিনেমা তৈরি করেছে প্যারামাউন্ট, যা দিন শেষে লাভের দেখা দিয়েছে। ‘মিন গার্লস’-এর আয় ছিল ১০ কোটি ও ‘স্মাইল ২’র ১৩ কোটি ডলার। যদিও ‘ইফ’ ও ‘ট্রান্সফরমারস ওয়ান’ প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করেনি। অন্যদিকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সনির জন্য বছরটা একেবারে মন্দ যায়নি। ‘ব্যাড বয়েজ’ ও ‘গারফিল্ড’ মুভি বঙ্ অফিসে ভালো করেছে। ‘ইন এন্ডস উইথ আস’ও যথেষ্ট সফল ছিল। কিন্তু ‘স্যাটারডে নাইট’ ও ‘ক্র্যাভেন দ্য হান্টার’-এর মতো সিনেমা সনিকে বেশ ভুগিয়েছে। বিপরীতে অনেকটাই অসাধ্য সাধন করেছে ইউনিভার্সাল। বঙ্ অফিসে ফ্লপ হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও উইকেড ছিল সফল। চলতি বছর ‘হাউস অব গুচি’র জন্য লেডি গাগা আলোচিত হয়েছেন। অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে ‘ডেসপিকেবল মি ৪’ ও ‘কুং ফু পান্ডা ৪’ পেয়েছে দর্শকপ্রীতি। স্টুডিওর সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিল ‘দ্য ফল গাই’। ওয়ার্নার ব্রুসের জন্য সামপ্রতিক বছরগুলো ছিল বিশৃঙ্খল। ‘ডুন: পার্ট ২’ বঙ্ অফিসে ঈর্ষণীয় সফলতা দেখিয়েছে। তারপরও ‘ম্যাঙ্: ফিউরি রোড’ ও ‘হরাইজন’-এর ব্যর্থতা নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে প্রতিষ্ঠানটিকে। চলতি বছর হলিউডে নতুন পা রেখেছে অ্যাপল ও অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠান। এখনও তারা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করতে পারেননি। হলিউডের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যাপলের অবস্থান যথেষ্ট হতাশাজনক। প্রতিষ্ঠানটি ফোন ও কম্পিউটার বানাতে বেশ দক্ষ হলেও সিনেমায় এখনও সেভাবে সফল নয়। টেক জায়ান্টটি বড় বাজেটের ‘আর্গাইল’ ও ‘ফ্লাই মি টু দ্য মুন’ প্রকল্পগুলো থেকে তেমন সাফল্য পায়নি।
https://www.kaabait.com