স্পোর্টস: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ব্যস্ততা দেশের ক্রিকেটে। যা শেষ হবে আগামী ১ মার্চ। আর এই সফর শেষ হওয়ার পরই টাইগারদের শুরু হয়ে যাবে জাতীয় দলের হয়ে ব্যস্ততা। কারণ বিপিএলের ফাইনালের দিনই পূর্ণাঙ্গ সফরে বাংলাদেশে আসবে শ্রীলঙ্কা। ইতোমধ্যে গত পরশুদিন এই সিরিজের সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে দেখা যায় ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাখা হয়নি একটি ম্যাচও। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হিসেবে যাত্রা শুরু শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের। এই প্রথম বার পূর্ণাঙ্গ কোনো সিরিজের একটি ম্যাচও রাখা হলো না এই মাঠে। প্রথম বার মিরপুরে কোনো ম্যাচ না রাখার পেছনের কারণ সম্পর্কে গত শনিবার জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। বিসিবির প্রকাশিত সূচি অনুসারে এই এই সিরিজটি শুরু হবে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি দিয়ে। যা অনুষ্ঠিত হবে সিলেটে। ৪ মার্চ প্রথম, ৬ মার্চ দ্বিতীয় ও ৯ মার্চ হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি। প্রথম দুটি ম্যাচ সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হলেও শেষটি হবে বিকাল ৩টায়। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে উভয় দল যাবে চট্টগ্রাম। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ওয়ানডে। এরপর ১৫ ও ১৮ মার্চ হবে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ। প্রথম দুই ওয়ানডে শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়। শেষেরটা শুরু হবে সকাল ১০টায়। ঢাকা বাদ দিয়ে কেন ঐ দুই ভেনুকে বাছাই করা হয়েছে সে প্রসঙ্গে গত শনিবার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘ঢাকাতে মেয়েদের খেলাটা আগে ঠিক করা ছিল যার জন্য আমরা পরিবর্তন করিনি। মেয়েদের জন্য আমরা জায়গা করে দিয়েছি। আমাদের খেলাটা আমরা সিলেট-চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়েছি।’ এ ছাড়া এই সিরিজে রয়েছে দুইটি টেস্ট ম্যাচ। যা প্রথমটি আগামী ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সিলেটে ও দ্বিতীয় ও সবশেষ টেস্টটি অনুষ্ঠিত হবে ৩০ মার্চ চট্টগ্রামে। মিরপুর ছাড়া ঐ দুই ভেনুতে টেস্ট আয়োজনের প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘ঐগুলোর মাঠ তো ভালো, উইকেটও ভালো সুতরাং অতটা চ্যালেঞ্জিং (আয়োজন) হওয়ার কথা না। আমার মনে হয় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।’ আগে বাংলাদেশে কোনো দল খেলতে এলে স্পিন বোলিংয়ের উইকেটের বিষয়টি বিবেচনায় রাখত। পিচ হতো উইকেট-বান্ধব। মূলত এই মন্ত্রেই বিদেশি শক্তিশালী দলগুলোকে দেশের মাটিতে পরাস্ত করার কৌশল ছিল টাইগারদের। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেসার ও ব্যাটারদের দাপটের কারণে এই জিনিসটা কমে আসছিল। কিন্তু সবশেষ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে দেখা গিয়েছিল ফের স্পিন-বান্ধব উইকেট। আসন্ন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও এরকম কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান হোম অ্যাডভান্টেজ তো নেবই আমরা। বলেন, ‘উইকেট নিয়ে কন্ডিশন নিয়ে এই প্রসঙ্গে আসলে কথা বলা ঠিক না। তো আমরা উইকেট যেমনই হোক, প্রথম কথা হলো এটা আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজ। সব আমরা আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজ নেবই, সেটা সব দেশই করে। তো আমরা সেই সুবিধা নেওয়ার পথেই এগোবো, আমি মনে করি এটা আমাদের সুট করে।’ এদিকে জাতীয় দলের ক্রিকেট ব্যস্ততা নেই, চলতে বিপিএল তাই পরিবারের সঙ্গে ছুটিতে আছেন টাইগার হেড কোচ চÐিকা হাথুরুসিংহে। এ ছাড়া গেল বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের কয়েক জন কোচিং স্টাফের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে বিসিবির। যা এখনো রয়েছে শূন্য পদে। যদিও কয়েক সপ্তাহ আগে বিসিবি কোচ নিয়োগের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। এ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘হেড কোচ চলে আসবেন ২০ তারিখের মধ্যে। আর বাকি… আমরা কিছু বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম এ নিয়ে যা আমি দুইদিন আগেও আপনাদের বলেছি। এটা আমরা প্রসেসে আছি, আজকেও আমরা বসেছিলাম শর্টলিস্ট করেছি, মিটিং ছিল। আমাদের একটা কমিটি আছে নাইমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন, আমি, সিও এবং ডেভিড মোর আজকে আমরা বসেছিলাম এইখানে। আলাপ করেছি আরও কয়েক জনের শর্টলিস্ট করেছি আমরা। তো খুব শিগিগরই আমরা তাদের ইন্টারভিউ নিচ্ছি। আগামী ৬ তারিখে আমরা তাদের অনলাইনে ইন্টারভিউ নেব।’ এছাড়া বিশ্বকাপের পর ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলাকালীন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ শ্রীলঙ্কান স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের। এরপর থেকেই চলছিলো গুঞ্জন যে দ্বিতীয় মেয়াদে তাকেই ফিরিয়ে আনা হবে টাইগার স্পিনারদের দায়িত্বে। তবে শনিবার বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জানিয়ে দিলেন তিনি আর আসছেন না। হেরাথের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হেরাথ আমাদের সঙ্গে আর থাকছে না। হেরাথকে আমরা যেটা (অফার) দিয়েছিলাম সে সেটা গ্রহণ করেননি। তো হেরাথের অধ্যায়টা শেষ।’
https://www.kaabait.com