• মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪

রবি ফের জাতীয় দলের স্পন্সর

প্রতিনিধি: / ১৬১ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

স্পোর্টস: মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ল রঙিন ব্যানার। সামনে এগোতে দেখা মিলল আরও কয়েকটি ব্যানারের, যেগুলো ধাবমান মূল মাঠের দিকে। মাঠের সবুজ গালিচায় গড়ে তোলা হয়েছে লাল মঞ্চ। সেখানেই ছোট্ট এক বর্ণিল আয়োজনে ঘোষণা করা হলো, জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন পৃষ্টপোষক টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড। সেই প্রতিষ্ঠান, সাড়ে ৫ বছর আগে যারা চুক্তি শেষের আগেই এই জায়গা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল। নতুন করে আবার তারা ফিরে এসেছে ক্রিকেটে। এই ফেব্রæয়ারি থেকে ২০২৭ সালের জুলাই পর্যন্ত বিসিবির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তারা ৫০ কোটি টাকায়। আগের চুক্তির চেয়ে এই অঙ্ক উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কম। গত নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে দারাজের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি শেষ হওয়ার পর থেকে স্পন্সর ছিল না জাতীয় দলের। দেশের মাঠে নিউ জিল্যান্ড সিরিজ ও পরে নিউ জিল্যান্ড সফরে কোনো স্পন্সর ছিল না দলের। রবিকে পেয়ে তাই বিসিবিও স্বস্তি পেল যেন। আগের দফায় ২০১৫ সালে জাতীয় দলের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় রবির। তখন প্রাথমিক চুক্তি ছিল ২০১৭ পর্যন্ত। পরে চুক্তি নবায়ন করে সেটি ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ ১০ মাস বাকি থাকতেই সরে দাঁড়ায় রবি। দুই পক্ষের সম্পর্কের টানাপোড়েনের গুঞ্জনও ছিল তখন। রবির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, ‘পৃষ্ঠপোষকতা বিষয়ক চুক্তিটি প্রাসঙ্গিকতা হারানোয়’ তারা সরে দাঁড়িয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত না জানালেও শোনা গিয়েছিল, বিসিবি চুক্তির কিছু শর্ত ঠিকভাবে মানতে পারছে বলে মনে করছে রবি। মূলত সাকিব আল হাসানসহ দেশের তারকা ক্রিকেটারদের কয়েকজনের সঙ্গে অন্যান্য টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত চুক্তিকে ঘিরে ছিল টানাপোড়েন। এবার তাই আগেভাগেই সতর্ক বিসিবি। চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরি বলেন, সার্বিক দিক মাথায় রেখেই করা হয়েছে এবারের চুক্তি। “আমি বলব না যে, (প্রথম মেয়াদে) আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়েছিল। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে আলাদা হয়েছিলাম। কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনার জায়গা ছিল। সমঝোতার মাধ্যমে সেগুলো সেরে আমরা পরে অন্য পৃষ্ঠপোষকের দিকে যাই।” “রবি আবারও আমাদের সঙ্গে আসায় তাদের ধন্যবাদ ও স্বাগত জানাই। যে বিষয়টা (ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি) বলেছেন, সেগুলো অবশ্যই আমাদের ভাবনায় ছিল। এসব বিবেচনায় রেখেই আমরা নতুন চুক্তিতে যাচ্ছি। আশা করি, এটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।” প্রথম মেয়াদে শেষটা ভালো না হলেও সামনে বড় কিছুর আশায় আবারও বিসিবির সঙ্গে জোট বাধার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রবির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ। “জাতীয় দল বা বিসিবির সঙ্গে কাজ করা গর্বের ব্যাপার। এই সুযোগের জন্য আমরা সবসময় অপেক্ষা করেছি৷ আগে যে আমরা সরে গিয়েছিলাম, সেটা সমঝোতার মাধ্যমে হয়েছিল। এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার সুযোগ দেখেছি আমরা। তাই রবি আবারও আগ্রহ নিয়ে ফিরে এসেছে।” এখনও অবশ্য টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে জাতীয় ক্রিকেটারদের। এই বিষয়ে বিসিবি সিইও জানালেন, নতুন করে আর এমন চুক্তি কররে পারবেন না ক্রিকেটাররা। “সাংঘর্ষিক কোনো ব্র্যান্ডের সঙ্গে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা চুক্তি করতে পারবে না। তবে যেসব ক্রিকেটারদের বর্তমানে চুক্তি রয়েছে, তারা সেটি মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে নিতে পারবে। নতুন করে কেউ সাংঘর্ষিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না।” প্রশ্ন উঠল পৃষ্ঠপোষকতার মূল্য কমে যাওয়া নিয়েও। আগের দফায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সাহারার সঙ্গে বিতর্কিত চুক্তির পর ২০১৫ সালে রবির সঙ্গে চুক্তি হয় বিসিবির। সেবার অবশ্য একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে জিতে পরে রবির হাতে তুলে দেয় স্পন্সরশিপ। আনুষ্ঠানিকভাবে তখন জানানো হয়নি টাকার অঙ্ক। তবে তা দুই বছরের জন্য ৪২ কোটি টাকার আশপাশে ছিল বলে জানা গিয়েছিল নানা সূত্র থেকে। পরে ২০১৭ সালে আবার দুই বছরের জন্য রবি চুক্তি করে ৬৪ কোটি টাকায়। অথচ এবার সাড়ে তিন বছরের জন্য চুক্তি হয়েছে ৫০ কোটি টাকায়। অন্যান্য আরও অনেক খাত থেকে স্পন্সরশিপের আয় কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে কারণটি তুলে ধরা হয় বিসিবির পক্ষ থেকে, এবারও সেটিই বললেন প্রধান নির্বাহী। “সবকিছু তো আসলে তুলনা করা যায় না (অন্য দেশের সঙ্গে)। আমাদের মনে হয়েছে, এটি ভালো চুক্তি। বর্তমান প্রেক্ষাপট ও অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারপর আমাদের মনে হয়েছে, রবির সঙ্গে এই চুক্তিটা আমরা করতে পারি।”


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com