স্পোর্টস: দারুণ ছন্দে থাকা মুর্শিদা খাতুন খেললেন দায়িত্বশীল ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিলেন অন্যরা। দুইশ ছুঁইছুঁই পুঁজি পেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। পরে বোলাররা চেপে ধরলেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। লক্ষ্যের কাছাকাছিও যেতে পারল না আবাহনী লিমিটেড। মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শনিবার আবাহনীর বিপক্ষে বড় জয় পায় মোহামেডান। পঞ্চম রাউন্ডের অন্য দুটিও হয় ছোট রানের ম্যাচ। জাবিদ আহসান সোহেল ক্রিকেট ক্লাবকে হারায় গুলশান ইয়ুথ ক্রিকেট ক্লাব। আর সিটি ক্লাবের বিপক্ষে সহজ জয় পায় বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।
আবাহনীকে থামিয়ে মোহামেডান টানা পঞ্চম
প্রথম চার রাউন্ডে দুই দলই ছিল অপ্রতিরোধ্য। প্রতিপক্ষকে তেমন সুযোগ না দিয়ে একের পর জয় পায় আবাহনী ও মোহামেডান। পঞ্চম রাউন্ডে মুখোমুখি লড়াইয়ে থামল আবাহনীর জয়রথ। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল মোহামেডান। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে ১১১ রানে জেতে মোহামেডান। ১৮৮ রানের লক্ষ্যে ২৯.১ ওভারে কেবল ৭৬ রানে গুটিয়ে যায় আবাহনী। মোহামেডানের সমান পাঁচ জয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদেরও। তবে শ্রেয়তর নেট রান রেটের সৌজন্যে এক নম্বরে মোহামেডান। ৪ জয়ে তিনে আবাহনী। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭৩ রানের জুটি গড়েন মোহামেডানের দুই ওপেনার জেসিয়া আক্তার ও মুর্শিদা। ৪৪ বলে ৪১ রান করে ফেরেন জেসিয়া। এরপর সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে ৫৫ রান যোগ করেন মুর্শিদা। ৩২ রান করে সোবহানার বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি। মুর্শিদার ব্যাট থেকে আসে ৫ চারে ৭৮ বলে ৫৫ রান। এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে ৮০.২৫ গড়ে তার সংগ্রহ লিগের সর্বোচ্চ ৩২১ রান। আর কেউ তিনশ রান করতে পারেননি। শেষ দিকে সালমার ৪৪ বলে ৩২ রানের সৌজন্যে দুইশর কাছাকাছি পৌঁছায় মোহামেডান। আবাহনীর হয়ে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন তরুণ অফ স্পিনার শরিফা খাতুন। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার ৪৩ রানে নেন ২ উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলের সবচেয়ে খরুচে বোলিং করে ৮.২ ওভারে ৩৯ রানে জাহানারা আলম পান ১ উইকেট। রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে আবাহনী। একবারের জন্যও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি তারা। দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন মাত্র তিন ব্যাটার। সর্বোচ্চ ২০ রান করেন রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। ২টি করে উইকেট নেন সালমা, আয়েশা রহমান ও রুমানা আহমেদ। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন সালমা।
গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের সহজ জয়
বিকেএসপির ১ নম্বর মাঠে জাবিদ আহসান সোহেল ক্রিকেট ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারায় গুলশান ইয়ুথ ক্লাব। ৪৩ ওভার খেলে মাত্র ৬৯ রানে গুটিয়ে যায় জাবিদ আহসান। ১৭.৪ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গুলশান ইয়ুথ। পাঁচ ম্যাচে গুলশান ইয়ুথের এটি দ্বিতীয় জয়। ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সাত নম্বরে তারা। এখনও প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা জাবিদ আহসান টেবিলের তলানিতে। প্রতিপক্ষকে অল্পেই আটকে রাখার পথে ৬ ওভারে ৩ মেইডেনসহ ৩ রানে ৩ উইকেট নেন শারমিন আক্তার ছোঁয়া। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এছাড়া ববিতা মিনা ৮ ওভারে ১০ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। জাবিদ আহসানের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৭ রান করেন সুরভি রায়। দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন শুধু দুই ব্যাটার। রান তাড়ায় গুলশান ইয়ুথের পক্ষে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন একা মল্লিক অবনি। শেষ দিকে পেশির টানে আহত অবসর হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। বাকি কাজ অনায়াসেই করেন অন্যরা।
সিটি ক্লাবকে উড়িয়ে দিল আনসার ও ভিডিপি
দিনের অন্য ম্যাচেও তেমন রান হয়নি। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে আগে ব্যাট করে ৪৭.২ ওভার খেলে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় সিটি ক্লাব। ¯্রফে ২ উইকেট হারিয়ে ২২.৫ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি। পাঁচ ম্যাচে দুই জয়ের সঙ্গে একটি পরিত্যক্ত ম্যাচের পয়েন্টে টেবিলের পাঁচ নম্বরে আনসার ও ভিডিপি। এখনও জয়ের খোঁজে থাকা সিটি ক্লাবের অবস্থান নবম। বল হাতে ৯ ওভারে ১৮ রানে ৩ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ে ১৯ বলে ২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন রিতু মনি। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এছাড়া ৩ উইকেট নেন অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন। অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন ধরেন ২ শিকার। সিটি ক্লাবের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন ভারতীয় ব্যাটার গার্গি সুনিল ওয়ানকার। রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৬৯ রান করে ফেলেন শারমিন সুপ্তা ও আরবিন তানি। ২ চারে ৫৫ বলে ৩২ রান করেন আরবিন। শারমিন খেলেন ৩ চারে ৪৫ বলে ২৬ রানের ইনিংস। দুজনের বিদায়ের পর আয়েশা আক্তার জুনিয়রকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন রিতু।
https://www.kaabait.com