• বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩

মোদির দল এবার কি ৪০০ আসনে জিতবে ?

প্রতিনিধি: / ৩৭ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

বিদেশ : ভারতে ২০২৪ সালের আসন্ন নির্বাচনের প্রাথমিক প্রচারণায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোটের জন্য একটি লক্ষ্য ঘোষণা করেছেন। তার এই লক্ষ্যকে সফল জোট সরকারের বেশ উচ্চাভিলাষী মনে করা হচ্ছে। ‘আব কি বার ৪০০ পার’ ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ৪০০টির বেশি আসন পেতে যাচ্ছে, যার মধ্যে বিজেপি একাই পাবে ৩৭০টি আসন। ভারতের নির্বাচনের ৭৭ বছরের ইতিহাসে কোনোদল একবারই ৪০০টির বেশি আসন পেয়েছিল। ১৯৮৪ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বর্তমান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ৪০০টির বেশি আসন পেয়েছিল। খবর আলজাজিরার। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া ৪৪ দিনব্যাপী সাত ধাপের লোকসভা নির্বাচনে মোদির এই আশাবাদ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, তার এই হিসাব নির্ভর করছে বিজেপির জন্য দুর্ভেদ্য ওয়ে ওঠা দেশের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের ওপর, সেটি হচ্ছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল। ভারতের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের আবাস এই দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যে, সেগুলো হলো-তামিল নাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ, কেরালা ও তেলেঙ্গানা। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় শাসনাধীন পন্ডিচেরী ও লাক্ষাদ্বীপ রয়েছে এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলটিকে অর্থনৈতিকভাবে ভারতের সবচেয়ে সমৃদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দক্ষিণাঞ্চল থেকে ভারতের জিডিপিতে অবদান ৩০ শতাংশের বেশি। তবে ভারতের অর্থনীতিকে চাঙা করার কৃতিত্বের দাবিকারী নরেন্দ্র মোদির দল এই অঞ্চলের ১৩১টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩০টিতে জয়ী হয়েছিল গত নির্বাচনে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে কর্ণাটক থেকেই পেয়েছিল এর বেশিরভাগ আসন। কোনো আসন পায়নি তামিল নাড়ু, কেরালা ও অন্ধ্র প্রদেশে। আর এবারও এরকম হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। গত নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৩০৩টি, যার সিংহভাগই ছিল উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে। তাই ২০১৯ সালের হিসাবকে মাথায় রেখে এবারের লক্ষ্যপূরণে বিজেপিকে দক্ষিণের দিকেই জোর দিতে হবে, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির সঙ্গে জোট বেধে অংশ নেওয়া দলগুলো এই অঞ্চলে মোটেও ভালো ফলাফল করতে পারছে না। এ বিষয়ে ভারতের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামনের স্বামী পারাকালা প্রভাকর বলেন, আসন্ন নির্বাচনে ভারতের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভেদই প্রতিফলিত হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে উত্তরের রাজ্যগুলো চেয়ে এগিয়ে থাকা দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি তেমন প্রভাব ফেলতে পারছে না, যা কিনা বিজেপির রাজনীতির ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্য। প্রভাকরের মতে, হিন্দু জাতীয়তাবাদ বা হিন্দুত্বের দর্শন দক্ষিণের রাজ্যগুলোকে আকর্ষণ করতে পারছে না। এক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি এবার কৌশল নিয়েছেন তামিল নাড়ু রাজ্যকে লক্ষ্য করে। লোকসভায় ৩৯টি আসন নিয়ে প্রতিনিধত্ব করে রাজ্যটি। এপ্রিলের ১৯ তারিখে এই রাজ্যজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। আর সেটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ছয়বার তামিল নাড়ু সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখানকার নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন অ্যাপ, যেগুলোর মাধ্যমে রাজনৈতিক বক্তব্য অনূদিত হচ্ছে হিন্দি থেকে তামিল ভাষায়। দেশটির উত্তর ও দক্ষিণ অংশের এই বিভেদ আবেগের কোনো বিষয় নয়। বিষয়টি নির্ভর করছে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণের রাজ্যগুলোর উন্নয়নের সত্যিকার তথ্য ও পরিসংখ্যানের ওপর। আর তা প্রতিফলিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৯ এপ্রিল থেকেই।

 


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com