যাত্রী চাহিদা থাকলেও মেট্রোরেলের বগি আর না বাড়িয়ে ফ্রিকোয়েন্সির (বিরতি) সময় কমানোর একটা ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোরেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটা বড় সুবিধা এনে দিয়েছে। এখন মানুষের প্রচুর চাপ, অনেকে উঠতে পারে না। সেক্ষেত্রে একটা আলোচনা আছে যে, ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে ট্রেন বাড়িয়ে সুবিধাটা বাড়ানো যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মেট্রোরেল চালু করতে পারবো, কয়েক বছর আগেও এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মত ছিল। মেট্রো তো বাংলাদেশ রেলওয়ে না যখন তখন বগি বাড়ানো যাবে। যখন তখন একটা চেঞ্জ করা যাবে। পৃথিবীর কোন দেশে মেট্রোর বগির সংখ্যা পাঁচের বেশি নয়। আমাদের এখানে অলরেডি ছয়টা কাজ করতেছে। তিনি বলেন, এটা তো একটা টেকনোলজিক্যাল বিষয়। আমি অবাক হলাম, কোন কোন পত্রিকার সম্পাদকীয় লিখেছে যে, মেট্রোরেলের বগি আরও বাড়ানো হোক। এর বেশি বাড়ানোর আর কোন সুযোগ নেই। ফ্রিকোয়েন্সিটা দুই মিনিট করে কমানোর একটা ব্যবস্থা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের অন্যান্য মেট্রোরেল প্রকল্পের বিষয় বলেন, ফান্ড কমিয়ে প্ল্যান বিকৃত করতে আমরা চাইছি না।
বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে: মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের কারণে যেসব সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশের কথা যেখানে এসেছে সেটা আর হবে না। যে ১৩/১৪ লাখ রোহিঙ্গা হয়ে গেছে তাদের নিয়েই অনেক সমস্যা। আন্তর্জাতিকভাবে যে সাহায্য আসত সেটাও কমে গেছে। তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ। এই পরিস্থিতিতে আর সংখ্যা বাড়াতে চাই না। যারা বিজিপি সদস্যরা এসেছেন তারা তাদের নিয়ে যাবেন আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান মেনে। সেটা আলোচনা আছে। ফিরিয়ে নেবে সেটা নিশ্চিত। কারণ মিয়ানমারের সিটিজেন তারা তাদের নাগরিকদের নিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরতিহীন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রæ সীমান্ত দিয়ে সশস্ত্রদের অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশে। তাদের অনেকে আহত হয়েই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
দৃশ্যপট কখন কী হয়, তা পরিষ্কার নয়: ওবায়দুল কাদের জানান, ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কির সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি মার্কিন নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব থাকবে, কিন্তু আমেরিকাকে সরাসরি হোস্টাইল (বৈরী) করে বন্ধুত্ব আমরা চাই না। আমরা সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের যে সম্পর্ক আছে, তার উন্নয়ন করতে চাই। এ মুহূর্তে রাশিয়ার সঙ্গে সহজে লেনদেন করা কঠিন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রক্রিয়া আছে। আমরা একটি বড় পরিকল্পনা করতে যাচ্ছি। তারা সুবিধাজনক প্রস্তাবগুলোতে, যেগুলো যেগুলো সম্ভব, তারা অবকাঠামোগত উন্নয়নে অংশ নিতে চায়। সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের ওখানে আমাদের কৃষি পণ্য যায়, তারা যেগুলো আমদানি করে, সেগুলো যাতে সহজলভ্য হয়, সে বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করেছেন। এখানে সমস্যা হলো, রাশিয়ার সঙ্গে কোনো বিনিময় এবং এমনকি আমাদের যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি, যেটি উদ্বোধনে প্রেসিডেন্ট পুতিনও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন, সেটির যন্ত্রপাতি আনতে গিয়ে আমরা বাধার মুখে পড়েছি। এ মুহূর্তে রাশিয়ার সঙ্গে সহজে লেনদেন করা কঠিন। তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব থাকবে, কিন্তু আমেরিকাকে সরাসরি হোস্টাইল (বৈরী) করে বন্ধুত্ব আমরা চাই না। আমরা সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের যে সম্পর্ক আছে, তার উন্নয়ন করতে চাই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন (জো বাইডেন) চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। এখানে একটি অঙ্গীকার আছে। আমরা কারও সঙ্গে হোস্টাইল অ্যাটিটিউডে (বৈরী মনোভাব) যেতে চাই না। কাদের বলেন, আরেকটি বিষয়ে কথা হয়েছে। দৃশ্যপট কখন কী হয়, আমেরিকার নির্বাচনে কী ফল আসবে, তা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার না। ২০২৪ সালে আমেরিকার ফল কী হবে, এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
সংরক্ষিত নারী আসন থেকে মন্ত্রী আসতে পারেন: বর্তমান মন্ত্রিসভার পরিধি বাড়ছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন। তবে কিছু মন্ত্রণালয় যেমন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এগুলোতে কোনো না কোনো সময় মন্ত্রী আসবেন। সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের পর নারীদের মধ্যে থেকে মন্ত্রী আসতে পারেন।
https://www.kaabait.com