ভারতের বিভিন্ন কারাগারে সাজা ভোগ করার পরও মানবেতর জীবনযাপন করা বাংলাদেশিদের দেশে আনার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিবো, তাদের নিয়ে আসবো। নিয়মিত আমরা যখনই খবর পাঁচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফেরত আনা হচ্ছে।’
গত ২১-২২ জুন ভারত সফর নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুন) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বলে দেশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, তারা বলুক বিক্রিটা কিসের মাপে হচ্ছে? মাপটা কিসের মাধ্যমে হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। সারা বিশ্বে একটিমাত্র মিত্র শক্তি ভারত। যারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে স্বাধীন করে দিয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই কোনো দেশ যুদ্ধে সহযোগিতা করতে এলে, তারা সেখানেই থেকে যায়। বিজয়ী হওয়ার পরও তারা দেশ ছাড়ে না। এরকম অসংখ্য নজির আমরা দেখেছি। অথচ ভারত আমাদের মিত্র হিসেবে যুদ্ধ করেছে এবং জাতির পিতার আহ্বানে আবার তারা ফিরেও গেছে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা এগিয়ে যাব। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় তারা যেসব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, সেটা দেশকে উন্নয়ন করার। আমার কাছে সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাঁচ্ছে যে, আমার দেশের মানুষের কল্যাণে বিশেষ করে দেশের উন্নয়নে যার সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক রাখা দরকার, সেটা করে যাচ্ছি। ভারত আমাদের চরম দুঃসময়ের বন্ধু, তারা রক্ত দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে; কাজেই তাদের গুরুত্বটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আবার চীন যেভাবে নিজেকে উন্নত করেছে, সেখান থেকে আমাদের শেখার আছে। সব কিছু ভেবেই আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রস্তাব তো অনেক আসে, তবে যেখান থেকে যে প্রস্তাবই আসুক না কেন, সেই প্রস্তাবটা আমার দেশের জন্য কতটুকু প্রযোজ্য হবে এবং কল্যাণকর হবে সেটা ভেবেই গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেলপথ ব্যবহারের সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে কেন সমালোচনা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। ইউরোপে তো এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের কোনো বর্ডার নেই, তারা কী বিক্রি হয়ে গেছে? এতে বরং তাদের যোগাযোগ সুবিধা বেড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে। আমাদেরও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, এ যে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দেয়া হলো, সব থেকে লাভবান তো আমার দেশের মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত হবে, ব্যবসার ক্ষেত্রটাও উন্মুক্ত হবে। দেশ বিক্রি আমরা করি না, যারা কথা বলে তারা বিক্রি করা জন্য অথবা ইউজ মি মানে ব্যবহার করুন আমাকে, এ নিয়ে বসেই থাকে; এটা হলো বাস্তবতা। শেখ হাসিনা এই দেশ বিক্রি করবে না। কারণ এই দেশ স্বাধীন করেছে আওয়ামী লীগ।
https://www.kaabait.com