ভারতীয় বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের নির্ভরতা বেড়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৭৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে। দেশে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা পূরণে প্রতিবেশী দেশটি থেকে আনা বিদ্যুতের অবদান ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ। মূলত স্থানীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জ্বালানি সংকট ও বকেয়া দায়ের কারণে ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আনা বিদ্যুতের ওপর জাতীয় গ্রিডের নির্ভরতা বেড়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পাইপলাইনে আনা হচ্ছে। আর সহসাই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারত থেকে আমদানিনির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার কোনো সুযোগ দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে ভারত থেকে দেশে জিটুজি চুক্তির আওতায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে। তার পাশাপাশি ভারতের ঝাড়খন্ডে স্থাপিত আদানি পাওয়ারের গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভারতের রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন রয়েছে। যদিও আদানির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বিগত সরকারের আমলে করা ক্রয় চুক্তিটি নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞ এবং পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন সময়ে আপত্তি তুলেছে। তাদের অভিযোগ, অসম এ ক্রয় চুক্তি বিপিডিবিসহ গোটা বিদ্যুৎ খাতের লোকসান ও দায়ের বোঝাকে আরো ভারী করে তুলেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এ বকেয়া দায় দ্রুত কমানো না গেলে খাতটিতে ভারতনির্ভরতা দ্রুত কমিয়ে আনার সুযোগ নেই। সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি সংস্থান নেই। আসন্ন গ্রীষ্ম ও সেচ মৌসুম এবং রমজানের জন্যও জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের সম্ভাব্য সরবরাহকে ভারত থেকে আমদানীকৃত বিদ্যুৎকে হিসাবে নিয়ে প্রাক্কলন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বকেয়া দায় মেটানো নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঘন ঘন বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওসব বৈঠকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জ্বালানি আমদানি, বকেয়া দায় ও আদানির বিদ্যুৎসহ নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। তাছাড়া আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা এবং তাতে সম্ভাব্য ঘাটতি কীভাবে মোকাবেলা করা হবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান কীভাবে করা হবে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এদিকে ভারতের মিনিস্ট্রি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাসের উদ্যোগে ১১-১৪ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে এনার্জি উইক সামিট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই সামিটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান অংশ নিতে যাচ্ছেন। জ্বালানি উপদেষ্টার ভারতে যাওয়ার বিষয়টিতে এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
https://www.kaabait.com