• বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬

ব্যাংকের লেনদেন অর্ধেক কমেছে

প্রতিনিধি: / ২৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪

অর্থনীতি: অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ব্যাংকগুলোতে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত লেনদেন কমেছে। শাখাগুলোতে গ্রাহক উপস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম। নিরাপত্তার স্বার্থে কিছুকিছু ব্যাংকের শাখা বন্ধ রাখতেও দেখা গেছে। রোববার রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল ও গুলিস্তান এলাকা পরিদর্শনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরের পাশেই অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস। কিন্তু আজ ব্যাংকের প্রধান দরজা বন্ধ রাখতে দেখা যায়। ব্যাংকের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান দরজা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু অন্য পাশে একটি ছোট দরজা আছে, সেদিক দিয়ে গ্রাহক আসা-যাওয়া করতে পারছেন। ছাত্র আন্দোলনের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যার উপস্থিতি অনেক কম। স্বাভাবিক দিনের সঙ্গে তুলনা করলে ৭০ শতাংশ লেনদেন কমেছে আজ। এখানে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে উত্তোলনের পরিমাণই বেশি। এদিকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময়ে শাখা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্রাহকদের এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি দায়িত্বরত কর্মচারীরা। মাহিদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী শাখাটিতে এসে অনেকক্ষণ থেকে ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সম্পন্ন করতে পারেননি। তিনি জানান, কোনো নোটিশ ছাড়াই এভাবে শাখা বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। অন্যান্য ব্যাংকের মতো একটি বিকল্প দরোজা রাখলেও পারত। এদিকে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার দরজার আংশিক, দিলকুশার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংকের প্রধান দরজা বন্ধ দেখা গেছে গতকাল। দিলকুশায় অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আশপাশে মিছিলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে কখনো শাটার বন্ধ রাখছি আবার কখনো খুলছি। আমার কাছে শাখার নিরাপত্তা সবার আগে। গ্রাহকরা যাতে নির্বিঘেœ লেনদেন করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও রেখেছি আমরা।’বক চত্বরে অবস্থিত সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চের কাউন্টারগুলো ছিল জনমানবশূন্য। মাঝেমধ্যে দু-একজন গ্রাহক আসছেন এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে খুব দ্রæত চলে যাচ্ছেন। রবিউল পাটোয়ারী নামের একজন গ্রাহক জানান, জরুরি প্রয়োজনে কিছু টাকা দরকার, সে জন্য উঠাতে এসেছি। তা না হলে এই পরিস্থিতির মধ্যে ব্যাংকে আসতাম না। ফকিরাপুলের জনতা ব্যাংকের লেনদেনের চিত্রেও ফুটে উঠেছে ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব। গ্রাহক উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, লেনদেন স্বাভাবিক। তাঁরা জানান, এই শাখাতে মূলত বিমানের টিকিট কিনতে গ্রাহকরা টাকা জমা দিয়ে থাকেন। এখন ১২টা বাজছে। ২টার পর থেকে চাপ তৈরি হবে লেনদেনের। প্রতিদিনই এই সময় অল্প গ্রাহক দেখা যায়। ছাত্র আন্দোলনকে লেনদেনের জন্য কোনো সমস্যা মনে করছে না তিনি। তা ছাড়া পার্শ্ববর্তী থানায় অবহিত করে রাখা হয়েছে। নটর ডেম কলেজের বিপরীত পাশে অবস্থিত এটিএম বুথগুলোতে কোনো গ্রাহককে দেখা যায়নি। মাঝেমধ্যে দু-একজন করে এসে টাকা উঠাচ্ছেন। তবে অন্যান্য দিনের মতো চাপ নেই বলে জানা গেছে। দিলকুশা এলাকার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া শাখা ইসলামি ব্যাংকের লোকাল অফিস। সেখানেও ফুটে উঠেছে অসহযোগ আন্দোলনের ছাপ। অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির কারণে পুরো এলাকা প্রায় ফাঁকা। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ইসলামি ব্যাংকের লোকাল অফিসে লেনদেন করতে আসতে কাউকে দেখা যায়নি। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ একেবারেই কম। স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ৭৫ শতাংশ লেনদেন কম হয়েছে আজ। এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এতে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ব্যাংকের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ব্যাংকাররা। আন্দোলন ভবিষ্যতে ভয়াবহ আকার ধারণ করে কি না এমন ভীতি থেকে ব্যাংকের এটিএম এবং এজেন্ট পয়েন্টগুলো থেকে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা তুলে রাখছেন অনেকে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com