বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলটির মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের কি বৈধ অধিকার রয়েছে? তার গঠনতন্ত্র সে লঙ্ঘন করেছে। শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সারা দেশে অসংখ্য বেনজীর আহমেদ ও আজিজ আহমেদ সৃষ্টি করেছে, তাদের খুঁজে বের করতে নিজস্ব তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলেছে বিএনপি, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র পড়েছেন? মির্জা ফখরুল কত বছর থাকতে পারেন? এই ডিসেম্বরের পরের ডিসেম্বর আমার টার্ম শেষ। যথাসময়ে সম্মেলন হবে আমাদের। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল কত বছর ধরে তার গঠনতন্ত্রকে লঙ্ঘন করে মহাসচিব হিসেবে আছেন? তারাই গণতান্ত্রিক দল নয়, তারা নিজেরা ঘরে গণতন্ত্র চর্চা করে না, দেশের গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবে? মির্জা ফখরুলের কি বৈধ অধিকার রয়েছে? তার গঠনতন্ত্র সে লঙ্ঘন করেছে। সম্মেলন ছাড়া মহাসচিব কত বছর, সেটা আগে জিজ্ঞেস করুন। বিএনপি দুর্নীতিগ্রস্তদের তালিকা করতে পারে কি না, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, লিস্ট করলে তো প্রথমে বিএনপি নেতাদের নাম লিখতে হবে। কারণ দুর্নীতি-লুটপাটের শিরোমণি তারা। বিএনপি নেতাদের নাম আগে আসবে। তারপর অন্য লিস্ট দেখা যাবে। বেনজীর আহমেদের গ্রেপ্তার হওয়া না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটার তো প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ায় দুদক তদন্ত করছে। দুদক যদি মামলা করে, তারপর আদালত ঠিক করবে গ্রেপ্তার করবে, কখন করবে, জেলে পাঠাবে। বিচারব্যবস্থার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে। আমরা সরকার কী আদেশ দিবো? অনেক গণমাধ্যম জানাচ্ছে বেনজীর সপরিবার দেশত্যাগ করেছে, তার আগেই গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এটা জানি না, এটা এখনও পরিষ্কার না। বেনজীর ৩২টি ব্যাংক থেকে ইতোমধ্যে তার টাকা তুলে ফেলেছে বলে শোনা যাচ্ছে, এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব বিষয়ে যেহেতু আমি অবহিত নই, এটা আইনের বিষয়। দুদক বলছে তারা টের পেয়েছে, দুদক সেটা প্রমাণ করুক। কাদের বলেন, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেনজীর আহমেদকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্ত চলছে। দুদক মামলা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার বিদেশ যাত্রার বিষয়টি অবহিত নন বলে গণমাধ্যমকে জানান ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আমলে হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতি আর লুটপাটের ভবন। এখন তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে। বিএনপি আমলে দুর্নীতি করা দলের কাউকে কি কোনো শাস্তি দিয়েছে? প্রশাসনের কাউকে শাস্তি দিয়েছে তারা? আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তদন্ত হচ্ছে। সরকার-বিএনপির মতো ইমিউনিটি কালচার গড়ে তোলেনি। ওবায়দুল কাদের নিজের উদাহরণ দিয়ে আরও বলেন, আমি মন্ত্রী যদি দুর্নীতি করি, সেটা কি বিনাবিচারে শেষ হয়ে যাবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সব খবর আছে, কারা কী করে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসেও তিনি কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়া এ দেশে দুর্নীতি, লুটপাট, গণতন্ত্র ধ্বংস, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ-চেতনা নিশ্চিহ্ন করা, যুদ্ধের রণধ্বনীকে নির্বাসনে পাঠানো-এসব অপকর্ম যার হাতে, তার পক্ষে বলার কিছু নেই। সেবা দাস কে কার? বঙ্গবন্ধুকন্যা কারও সেবা দাস নয়। এখন তাদের মুখের বিষটাই বড় করে আমরা দেখতে পাচ্ছি। তারা একরাশ ব্যর্থতার স্তূপকৃত আবর্জনার ওপর দাঁড়িয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগছে। সেই মানসিক অশান্তির মধ্যে সত্য কথা বলতে তারা ভুলে গেছে। এসব এ দেশের জনগণ বিশ্বাস করে না। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।
https://www.kaabait.com