আওয়ামী লীগ সরকার দুঃশাসন ও জুলুম চালাচ্ছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ। তাদের এদিকও নেই, ওদিকও নেই। বন্ধুরাও আগের মতো এসে তাদের উৎসাহিত করে না। তিনি বলেন, আগে ঘুম থেকে উঠেই মির্জা ফখরুল মার্কিন দূতাবাসে হাজির হয়ে নাস্তা করতে যেতেন, রাতেও খুঁজে পাওয়া যেত না। বিদেশিরা ক্ষমতায় বসাবে এখন সে কর্পূরও উবে গেছে। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মানসিক ট্রমা ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। মির্জা ফখরুল ও তার দলের নেতারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা অস্ত্রসহ আটকের পর তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খুনিদের পক্ষে বিএনপির যে প্র্যাকটিস এখনো সেটা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো সাধারণ নাগরিক জেল, জুলুম বা হয়রানির মুখোমুখি হয়নি দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছে তারা তো অপরাধী। তাদের বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি। আটক করা হয়েছে সন্ত্রাস, আগুনসন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে। বিএনপির সব নেতাই বাইরে। তাহলে তাদের কে নির্যাতন করছে? আওয়ামী লীগ সরকারের জনভিত্তি নেই’ বিএনপির নেতাদের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসেছে। বাংলাদেশের এই হার অন্যান্য দেশের তুলনায় সন্তোষজনক। বিএনপির আমলে ১৫ ফেব্রæয়ারি নির্বাচনে বিবিসি জানিয়েছে ভোটার উপস্থিতি ছিল পাঁচ শতাংশ, আর তখনকার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল উপস্থিতি ২১ শতাংশ। এখনকার নির্বাচনে উপস্থিতি তার দ্বিগুণ। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে নির্বাচন কমিশন বলেছে উপস্থিতি ৩৬ শতাংশের বেশি। আর দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ শতাংশের বেশি। আমরা জনগণের প্রতিনিধি। আমরা জনগণের ইচ্ছায় দেশ শাসন করছি। বিএনপি পথ হারিয়ে পথহারা পথিকের মতো বেসামাল বক্তব্য দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছে, দখল নয়। বিএনপি বলছে দখল। জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচনের পর পৃথিবীর অনেক দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমরা বিএনপিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিটি পড়তে বলব। অপরাধের বিষয়ে সরকারের নীতি জিরো টলারেন্স জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক শাস্তি তাকে পেতেই হবে। সাবেক আইজিপি কিংবা সাবেক সেনাপ্রধান হলেও অপরাধ করলে আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক অপরাধ অপকর্ম করতে পারে। এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, তাদের অপরাধ-অপকর্মে শাস্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার সৎ সাহস দেখিয়েছে কিনা। শেখ হাসিনার সরকারের সেই সৎ সাহস আছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক স্বাধীন। সেখানে যদি কেউ অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয় আমরা কেন প্রটেকশন দেব? হোক তিনি সাবেক আইজিপি কিংবা সাবেক সেনাপ্রধান। অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির মুখে সোপর্দ করা হবে। সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বুয়েটে আবরার হত্যাকাÐে যাদের দÐ দেওয়া হয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগ। সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাÐের ক্ষেত্রেও সরকার কাউকে প্রটেকশন দেয়নি। ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। কিন্তু সরকার তাকে প্রটেকশন কেন দেবে? আমরা অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখি। সে যতই প্রভাবশালী হোক অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। মতবিনিময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
https://www.kaabait.com