• সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯

বন্দি ইমরানের ভোটপ্রদান

প্রতিনিধি: / ১৬৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বিদেশ : পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে কারাগার থেকেই নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটারের স্ত্রী ভোট দিতে পারেননি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। এ ছাড়া পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পাকিস্তানের নির্বাচনে স্পষ্ট করেই এগিয়ে আছেন মুসলিম লীগের শীর্ষ নেতা নওয়াজ শরিফ। তাদের ভাষ্য, চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে নওয়াজ। দ্য ডনের প্রতিবেদনে কারাগারের কয়েকটি সূত্রের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং অন্যান্য বিশিষ্ট রাজনৈতিক বন্দিরা আদিয়ালা জেল থেকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের যারা ডাকযোগে ভোট দিতে পেরেছেন তাদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহি, আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রধান শেখ রশিদ এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও রয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে আদিয়ালা কারাগারের ১০০ জনেরও কম বন্দি ভোট দিতে সক্ষম হয়েছেন। যা এই কারাগারের ৭ হাজার বন্দির মধ্যে মাত্র এক শতাংশ। দ্য ডন আরও জানায়, জেল প্রশাসন শুধুমাত্র সেই কয়েদিদের ভোট দেয়ার অনুমতি দিয়েছে যাদের বৈধ কম্পিউটারাইজড জাতীয় পরিচয়পত্র (সিএনআইসি) রয়েছে। বন্দিদের অধিকাংশের আসল সিএনআইসি না থাকায় পোস্টাল ব্যালটে করে ভোট দেওয়ার সংখ্যাও কম হয়েছে। এদিকে কারাগার সূত্র জানায়, ইমরান খানের স্ত্রী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি বুশরা বিবিও পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে আটক করার সময় এভাবে ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার কারণে তার অনুরোধ গ্রহণ করা যায়নি। বুশরা বিবির মুখপাত্র মাশাল ইউসুফজাই জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীকে কারাগার থেকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে দেয়া হয়নি। কারাগারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে জানিয়েছেন, আদিয়ালা জেল প্রশাসন গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে পোস্টাল ব্যালট পায় এবং পরে তা বন্দিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ব্যালট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২২ জানুয়ারি। পরে জেল সুপার আসাদ জাভেদ ওয়ারাইচ সিল করা খামে স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকার জেলা রিটার্নিং অফিসারদের (ডিআরও) কাছে ভোট দেওয়া ব্যালট পাঠানোর সময় আরও বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানের নির্বাচনে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার ভোট দিচ্ছেন। তাদের ভোটেই নির্ধারিত হবে, আগামী পাঁচ বছর দেশটির শাসন ক্ষমতায় কারা থাকবেন। তবে বিশ্বের নানা মিডিয়া ও থিংক-ট্যাংক বলছে, পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনে জিততে চলেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আর এই অনুমান সঠিক হলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজের এটি হবে চতুর্থ মেয়াদ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ ২০২৪ সালের এই সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হবেন বলে মার্কিন মিডিয়া এবং থিংক ট্যাংকগুলোর পাশাপাশি বিবিসি, গার্ডিয়ান এবং এএফপিসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটগুলো অনুমান করছে। এ বিষয়ে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানিরা যখন সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবে তখন নওয়াজ শরিফকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাতে না পারাটা হবে আশ্চর্যজনক। চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় আসার পর নওয়াজ শরিফ সেই অভিযোগগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করার সুযোগ পাবেন যার কারণে তিনি ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারিয়েছিলেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে নওয়াজ শরিফকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অস্থির সমর্থকদের সম্মুখীনও হতে হবে। আরেক মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে ছিলেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্ব›দ্বী নওয়াজ শরিফ। ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্বাচিত হতে চাইছেন এবং তেমনটি হলে বিদেশে কয়েক বছরের স্বেচ্ছা-নির্বাসনের পর এটি হবে নওয়াজের জন্য উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের ও ১০টি আসন অমুসলিম প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। সরকার গঠন করতে কোনো দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৬৯টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com