স্পোর্টস: মোহামেডান স্পোর্টিং আবারও ফাইনালে উঠতে পারবে কিনা, সেই ব্যাপারে সংশয় ছিল। কারণ পুলিশ এফসি আগে গোল করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। তবে ম্যাচের ভাগ্য সাদা-কালোদের জন্যই লেখা ছিল। বিরতির পর শুরুর দিকে পিছিয়ে থেকে আগ্রাসী ফুটবল খেলে মোহামেডান ২-১ গোলে পুলিশ এফসিকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে পুলিশের বিপক্ষে দাপট দেখায় মোহামেডান। পুরো ম্যাচে সুযোগও বেশি পেয়েছে আলফাজ আহমেদের দল। তবে প্রথমার্ধে আক্রমণ গড়েও গোল পায়নি সাদা-কালো দলটি। এই ম্যাচে সুলেমানে দিয়াবাতে সাসপেনশন কাটিয়ে খেলেছেন। তাতে মোহামেডানের আক্রমণে ধার বেড়েছে। ১২ মিনিটে আরিফের কাটব্যাক ইমানুয়েল সানডের হেড থেকে বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেষে। ৬ মিনিট পর এক ডিফেন্ডারের ভুল পাসে বক্সে বল পেয়ে যান শাহেদ, কিন্তু গোলকিপার বরাবর শট নেন পুলিশের এই ফরোয়ার্ড। ২১ মিনিটে ইমনের থ্রু পাসে ছুটে গিয়ে টোকা দিতে পারেননি সতীর্থ খেলোয়াড়। বলে গতি থাকায় চলে যায় পুলিশের গোলকিপারের গøাভসে। ২৬ মিনিটে পুলিশ অবশেষে সুযোগ পায়। তবে কাজে লাগানো যায়নি। ভেনেজুয়েলার এডওয়ার্ড মনিলোর দারুণ এক পাসে শাহেদ বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপার সুজন হোসেনকে ঠিকমতো কাটাতে পারেননি। বল চলে যায় বাইরে। দুই মিনিট পর মোহামেডানের আরিফ ইসলামকে নিজেদের অর্ধে গোলকিপার আহসান হাবিব বিপু হালকা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেও রেফারির চোখ এড়িয়ে যায়। ৩৯ মিনিটে ইমানুয়েল টনির ক্রসে দিয়াবাতে বক্সে বল পায়ে ঠিকমতো জমাতে পারেননি। ছুটে যাওয়া বল ক্লিয়ার করেন পুলিশের ডিফেন্ডাররা। বিরতির পর পুলিশ নেমেই গোল দিয়ে মোহামেডানকে নিস্তব্ধ করে এগিয়ে যায়। ৪৬ মিনিটে মুরিওর ফ্রি কিকে উখমাতোভের শরীর ডান দিকে বাঁকিয়ে নেওয়া হেড পোস্টের ভেতরের কোণায় লেগে জালে জড়ায়। গোলকিপার সুজন চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেননি। উখমাতভের সঙ্গে মার্কিংয়ে থাকা দিয়াবাতেও শুরুতে পারেননি তাকে আটকাতে। পিছিয়ে থেকে মোহামেডান যেন আহত বাঘের মতো গর্জন করে উঠলো। একের পর এক আক্রমণের ঢেউ। ৫৩ মিনিটে হাসান মুরাদের বক্সের ভেতর থেকে পাসে মুজাররফভ জোরালো শট নিলেও তা আহসান হাবিব ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করে দলকে ম্যাচে বাঁচিয়ে রাখেন। দুই মিনিট পর আরিফের ক্রসে সানডের প্লেসিং অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৬৮ মিনিটে সফলতার মুখ দেখে সাদা-কালোরা। সানডের দারুণ এক গোলে মোহামেডান কাক্সিক্ষত সমতায় ফেরে। মুজাফররভের পাসে দিয়াবাতের শট বøক হয়। ফিরতি বলে আরিফের পাসে ৬ গজ দূরত্বের একটু বাইরে থেকে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড বাঁ পায়ের দারুণ প্লেসিংয়ে সমর্থকদের আনন্দে ভাসান। ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল একটু পেছনে থেকেও সানডেকে আটকাতে পারেননি। ৭৪ মিনিটে হাসান মুরাদের ক্রসে সানডের প্লেসিং ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে যায়। ৪ মিনিট পর শাহরিয়ার ইমনের শট বøকড হয়। ফিরতি বলে সানডেও পারেননি লক্ষ্যে শট নিতে। পরের মিনিটে মোহামেডান ঠিকই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়। আরিফের পাসে সানডের মাপা ক্রসে শাহরিয়ার ইমন লাফিয়ে উঠে হেডে নিশানা ভেদ করেন। আহসান হাবিব বলের লাইনে ঝাঁপালেও আটকাতে পারেননি। শেষের দিকে দুই দলই চেষ্টা করেও গোল ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। রেফারি সায়মন সানির শেষ বাঁশি বাজতেই পুলিশের হৃদয় ভেঙে আরও একবার মোহামেডানের ফাইনাল নিশ্চিত হলো।
https://www.kaabait.com