স্পোর্টস: আড়াইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় ঝড়ো ফিফটিতে সুর বেঁধে দিলেন প্রাভসিমরান সিং। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন জনি বেয়ারস্টো। শশাঙ্ক সিং খেললেন বিস্ফোরক ইনিংস। এই তিন জনের নৈপুণ্যে রেকর্ড গড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারাল পাঞ্জাব কিংস। আইপিএলে শুক্রবার ইডেন গার্ডেন্সে ২৬২ রানের লক্ষ্যে পাঞ্জাব ৮ উইকেটে জিতে যায় ৮ বল বাকি থাকতেই। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয় এটিই। ২০২৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ২৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয় ছিল আগের রেকর্ড। আইপিএলে এর আগে সর্বোচ্চ ২২৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দুইবার জিতেছিল রাজস্থান রয়্যালস- ২০২০ সালে শারজাহতে তখনকার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ও চলতি আসরে কলকাতার বিপক্ষে ইডেনে। সেই ইডেনেই এবার সব রেকর্ড চুরমার করে দিল পাঞ্জাব। ৪৮ বলে ৯ ছক্কা ও ৮ চারে অপরাজিত ১০৮ রানের ইনিংস খেলে তাদের নায়ক বেয়ারস্টো। তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী প্রাভসিমরান ২০ বলে ৫টি ছক্কা ও ৪টি চারে করেন ৫৪ রান। ৮ ছক্কা ও ২ চারে ২৮ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে বেয়ারস্টোর সঙ্গে দলের জয় নিয়ে ফেরেন শশাঙ্ক। এই ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে ছক্কা হয়েছে মোট ৪২টি। কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যা সর্বোচ্চ। এবারের আইপিএলেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ ম্যাচের ৩৮ ছক্কা ছিল আগের রেকর্ড। এদিন পাঞ্জাবের ইনিংসেই ছক্কা হয়েছে ২৪টি। আইপিএলে এক ইনিংসে যা সর্বোচ্চ। চলতি আসরে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে হায়দরাবাদের ২২ ছক্কা ছিল আগের রেকর্ড। এই সংস্করণে এক ইনিংসে পাঞ্জাবের চেয়ে বেশি ছক্কা আছে কেবল নেপালের। গত বছর এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩১৪ রান করার পথে ২৬টি ছক্কা মেরেছিল তারা। টি-টোয়েন্টিতে একমাত্র তিনশ রানের ইনিংসের রেকর্ডও তাদের। বড় লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ার প্লের মধ্যে ¯্রফে ১৮ বলে ফিফটি করেন আর্শদিপ সিংয়ের ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ হিসেবে নামা প্রাভসিমরান। প্রথম পাঁচ ওভারে তার রান ছিল যখন ২০ বলে ৫৪, বেয়ারস্টোর তখন কেবল ১০ বলে ১২। পরের ওভারে আনুকুল রয়ের প্রথম চার বলে দুটি করে চার ও ছক্কা মেরে ডানা মেলে দেন বেয়ারস্টোও। ওই ওভারেই রান আউটে কাটা পড়েন প্রাভসিমরান। তার উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে পাঞ্জাব তোলে ৯৩ রান। তিনে নেমে ১৬ বলে ২৬ রান করে বিদায় নেন রাইলি রুশো। তার সঙ্গে ৩৯ বলে ৮৫ রানের জুটির পর শশাঙ্কের সঙ্গে ৩৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৪ রানের জুটিতে দলকে জয়ের ঠিকানায় নিয়ে যান বেয়ারস্টো। এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৫ বলে। পাঞ্জাবের হয়ে আইপিএলে যা যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রæততম সেঞ্চুরি। ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে বেয়ারস্টোর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। ২০১৯ আসরে হায়দরাবাদের হয়ে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৫৬ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এবারের আসরে নিজের আগের ছয় ম্যাচে অবশ্য ভালো করতে পারেননি বেয়ারস্টো। ছিল না কোনো ফিফটি, ত্রিশ ছাড়াতে পারেন কেবল একবার। অবশেষে জ¦লে উঠলেন তিনি। শেষ চার ওভারে পাঞ্জাবের দরকার ছিল ৫২ রান। শ্রীলঙ্কার পেসার দুশমান্থা চামিরার করা ১৭তম ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন শশাঙ্ক। পরের ওভারে হার্শিত রানাকে টানা দুই ছক্কায় আসরে দ্বিতীয় ফিফটি করেন তিনি ২৩ বলে। জয়সূচক রানও আসে তার ব্যাট থেকেই। বিফলে গেছে কলকাতার হয়ে ফিল সল্ট (৩৭ বলে ৭৫) ও সুনিল নারাইনের (৩২ বলে ৭১) বিধ্বংসী ইনিংস। ক্যারিবিয়ান অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার নারাইন পরে বোলিংয়েও ভালো করেন। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন রুশোর উইকেট। তবে দিনটি যে তার ছিল না, ছিল না কলকাতার। প্রাভসিমরান, বেয়ারস্টো ও শশাঙ্কের ব্যাটে উড়ল পাঞ্জাব।
https://www.kaabait.com