স্পোর্টস: দুইশর কাছাকাছি লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম দুই ওভারে দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়। খানিকটা চাপে তখন পাকিস্তান। কিন্তু কিসের কী! মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাখার জামান যেন সব দুর্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন তুড়ি মেরে। তাদের খুনে ব্যাটিং আর রেকর্ড জুটিতে আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাবর আজমের দল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় ৭ উইকেটে। ডাবলিনে রোববার আয়ারল্যান্ডের ১৯৩ রান ১৯ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় সফরকারীরা। ৪০ বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন ফাখার। রিজওয়ান দলের জয় নিয়ে ফেরেন ৪৬ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে। ৪টি ছক্কা ও ৬টি চারে সাজানো ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। এই দুজনের জুটিতে আসে ৭৮ বলে ১৪০ রান, এই সংস্করণে তৃতীয় উইকেটে যা পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের জুটি। আগের রেকর্ডেও নাম ছিল রিজওয়ানের। ২০২১ সালে করাচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হায়দার আলির সঙ্গে ১০৫ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডকে এদিন লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে ৩৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন লর্কান টাকার। বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৩ ওভারে ২৭ রান তুলে ফেলে আয়ারল্যান্ড। চতুর্থ ওভারে ৪ বলের মধ্যে দুই ওপেনার অ্যান্ডি বালবার্নি ও পল স্টার্লিংকে ফিরিয়ে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। জোড়া ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে হ্যারি টেক্টরের সঙ্গে ৪৭ বলে ৬২ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন টাকার। ২৮ বলে ৩২ রান করে বিদায় নেন টেক্টর। টাকার চতুর্থ উইকেটে ২২ বলে ৪১ রানের আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন কার্টিস ক্যাম্পারের সঙ্গে। প্রমোশন পেয়ে পাঁচে নামা ক্যাম্পার ১৩ বলে ২ ছক্কা ও একটি চারে করেন ২২ রান। টাকার বিদায় নেন ফিফটির পরপরই। জর্জ ডকরেলের ৮ বলে ১৫ ও গ্যারেথ ডেলানির ১০ বলে অপরাজিত ২৮ রানের ক্যামিওতে দুইশর কাছাকাছি যায় আইরিশরা। লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের তৃতীয় বলে ক্যাম্পারের দারুণ ক্যাচে ফেরেন সাইম আইয়ুব। পরের ওভারে গ্রাহাম হিউমের বলে আলগা শটে বাবর আজম বিদায় নেন শূন্য রানে। তখন ১৩ রানে ২ উইকেট নেই পাকিস্তানের। সেখান থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন রিজওয়ান ও ফাখার। দুজন অবশ্য ভাগ্যের সহায়তাও পান। ৩০ রানে জীবন পান রিজওয়ান, ২৬ রানে ফাখার। দুজনেরই ক্যাচ ফেলেন হিউম। সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিজওয়ান ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে। চারে নামা ফাখার পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৩১ বলে। বেন হোয়াইটকে পরপর চার ও ছক্কা মারার পরের বলে ডেলানির দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন ফাখার। জয়ের জন্য তখন দরকার ছিল ৩৩ বলে ৪১ রান। আজম খানের তাÐবে পরের ১৪ বলেই জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে যায় পাকিস্তান। মার্ক অ্যাডায়ারকে টানা তিন ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে দেন আজম। ১০ বলে ৪ ছক্কা ও এক চারে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। আইরিশদের কাছে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হারার পর পাকিস্তানের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। এবার দাপুটে ব্যাটিংয়ে ধরা দিল জয়। একই মাঠে আগামী মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে হবে সিরিজের ফয়সালা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮৩/৫ (বালবার্নি ১৬, স্টার্লিং ১১, টাকার ৫১, টেক্টর ৩২, ক্যাম্পার ২২, ডকরেল ১৫, ডেলানি ২৮*, অ্যাডায়ার ৯, হিউম ২*; আফ্রিদি ৪-০-৪৯-৩, আমির ৪-০-৪৪-১, নাসিম ৪-০-৩৬-১, আব্বাস ৪-০-৩৩-২, ওয়াসিম ৩-০-২১-০, সাইম ১-০-৭-০)
পাকিস্তান: ১৬.৫ ওভারে ১৯৫/৩ (সাইম ৬, রিজওয়ান ৭৫*, বাবর ০, ফাখার ৭৮, আজম ৩০*; অ্যাডায়ার ৩.৫-০-৪৩-১, হিউম ৩-০-৩২-১, ইয়াং ৩-০-৪৫-০, ক্যাম্পার ৩-০-৩৩-০, হোয়াইট ৪-০-৩৯-১)
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ রিজওয়ান
https://www.kaabait.com