স্পোর্টস: ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম আট ওভারে একটি উইকেট হারিয়ে নিউ জিল্যান্ড তুলে ফেলল ৮১ রান। ঝড়ো ফিফটি করে ক্রিজে তখন টিম সাইফার্ট। কিন্তু শক্ত অবস্থানে থেকেও ব্যাটিং ধসে পথ হারিয়ে ফেলল কিউইরা। শাহিন শাহ আফ্রিদির দারুণ বোলিংয়ে জিতে সমতায় সিরিজ শেষ করল পাকিস্তান। লাহোরে শনিবার পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় ৯ রানে। ১৭৮ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে ১৬৯ রানে গুটিয়ে দেয় স্বাগতিকরা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ২-২ সমতায়। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয়টি জিতেছিল পাকিস্তান। পরের দুটি জিতে এগিয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সফরে আসা নিউ জিল্যান্ড। পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে অগ্রণী ভ‚মিকা রাখেন অধিনায়ক বাবর আজম। ৪৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। বল হাতে নায়ক আফ্রিদি। এক ম্যাচের বিশ্রাম কাটিয়ে ফিরে ৪ ওভারে ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি এই পেসার। ৪ ওভারে একটি মেইডেনে ২১ রানে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নেন লেগ স্পিনার উসামা মির। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। আরেক ওপেনার বাবর দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খানের সঙ্গে ৪৫ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২৪ বলে ৩১ রান করে বিদায় নেন উসমান। ৩৫ বলে ফিফটি করে এগিয়ে যান বাবর। সেঞ্চুরির পথে ছুটতে থাকা এই তারকাকে বোল্ড করে থামান বেন সিয়ার্স। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ। আগের ম্যাচে সিরিজে প্রথম খেলতে নেমে ফিফটি করা ফাখার জামান এবার ৩৩ বলে ৪৩ রানের ইনিংসের দলের স্কোর দেড়শ ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন শাদাব খান। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৬ জন বোলিং করে ৫ জন নেন একটি করে উইকেট। লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় নিউ জিল্যান্ড। দারুণ ডেলিভারিতে টম বøান্ডেলকে বোল্ড করে দেন আফ্রিদি। তবে আরেক ওপেনার সাইফার্ট তোলেন ঝড়। ফিফটি করেন তিনি মাত্র ২৯ বলে। শেষ ১২ ওভারে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের দরকার যখন ৯৮ রান, তখনই তাদের পথ হারানোর শুরু। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা সাইফার্টকে (৩৩ বলে ৫২) বোল্ড করে ৪৫ বলে ৭৬ রানের জুটি ভাঙেন উসামা। নিজের পরের ওভারে তিনি ধরেন আরেকটি বড় শিকার। রিভার্স সুইপ করার চেষ্টায় বোল্ড হন মার্ক চাপম্যান। আরেক লেগ স্পিনার শাদাব পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন মাইকেল ব্রেসওয়েলকে। ১৩ রানে বাবরের হাতে জীবন পেয়ে কিউই অধিনায়ক করেন ২৩ রান। কোল ম্যাককনকিকে টিকতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। ১ উইকেটে ৮১ থেকে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১০৩। জেমস নিশাম চেষ্টা করেন দলকে কক্ষপথে ফেরাতে। তবে বেশিক্ষণ টেকেননি তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে পরপর দুই বলে নিশাম ও জ্যাক ফউকসকে বিদায় করে দেন আফ্রিদি। কোটার শেষ ওভারে তিনি ধরেন চতুর্থ শিকার। জশ ক্লার্কসনের ব্যাটে শেষ দিকে উত্তেজনা ছড়ায় ম্যাচে। একটা পর্যায়ে নিউ জিল্যান্ডের সামনে জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ১০ বলে ১৫। এরপর আর কিছু করে দেখাতে পারেনি তারা। শেষ ওভারে ১২ রানের প্রয়োজনে মোহাম্মদ আমিরের প্রথম তিনটি ডেলিভারির (যার একটি ওয়াইড) মধ্যে দুই রান আউটে সমাপ্তি ঘটে ম্যাচের। ২৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন ক্লার্কসন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৭৮/৫ (সাইম ১, বাবর ৬৯, উসমান ৩১, ফাখার ৪৩, ইফতিখার ৬, শাদাব ১৫*, ইমাদ ৪*; ফউকস ৪-০-৩৫-১, ও’রোক ৪-০-২৫-১, সিয়ার্স ৪-০-৪৬-১, ব্রেসওয়েল ৩-০-২৮-০, সোধি ৪-০-৩০-১, নিশাম ১-০-১৩-১)
নিউ জিল্যান্ড: ১৯.২ ওভারে ১৬৯ (সাইফার্ট ৫২, বøান্ডেল ৪, ব্রেসওয়েল ২৩, চাপম্যান ১২, ম্যাককনকি ১, নিশাম ১৬, ক্লার্কসন ৩৮*, ফউকস ০, সোধি ৩, সিয়ার্স ৭, ও’রোক ০; আফ্রিদি ৪-০-৩০-৪, সাইম ২-০-২০-০, আমির ৩.২-০-৪১-০, আব্বাস ২-০-২৪-০, উসামা ৪-১-২১-২, ইফতিখার ১-০-১১-০, শাদাব ২-০-১৫-১, ইমাদ ১-০-৫-১)
ফল: পাকিস্তান ৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি
ম্যান অব দা সিরিজ: শাহিন শাহ আফ্রিদি
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ
https://www.kaabait.com