মোঃ ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা): পাইকগাছায় কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা’রা
বলেছেন, প্রতি বছর দেশের মোট চাহিদার ৯০ ভাগ ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়।
এতে প্রতি বছর যে টাকা আমদানি ব্যায় হয় তাতে প্রত্যেক বছর একটি করে
পদ্মা সেতু নির্মান করা যায়। এছাড়া সয়াবিনের নামে আমদানি করা হয় পাম্প
ওয়েল। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তেলের আমদানি কমাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে
সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোতে লবন সহিষ্ণু
ফসল ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায়
কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার সহায়তা দিচ্ছে। ৪ বছরে তেলের উৎপাদন ৪০ ভাগ
বাড়ানো সরকার লক্ষ নির্ধারণ করেছে। কৃষকের আয় বাড়াতে এবং দেশের চাহিদা
মেটাতে এক জমিতে দুই ফসল তিন ফসল রুপান্তর করতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা
বলেন, বিনা সরিষা-৯ একটি উচ্চ ফলনশীল স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট সরিষা ফসল এর
উৎপাদন খরচ অনেক কম ৬ থেকে ৮ ডিএস পারমিটার লবনাক্ততায় চাষ করা যায়। ৫ দিন
পানিতে তলিয়ে থাকলেও স্বাভাবিক উৎপাদন হয়। বিনা চাষে এবং দেরিতে (১৫
ডিসেম্বর) চাষ করা যায় এবং এর উৎপাদিত সরিষা বীজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
বক্তারা উপক‚লীয় অঞ্চলের চিংড়ী ঘেরের লবনাক্ত জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে বিনা
সরিষা-৯ চাষ করার জন্য কৃষদের প্রতি আহবান জানান। সোমবার সকালে
পাইকগাছা উপজেলার হিতামপুরে বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকাল
বিশিষ্ট সরিষার জাত বিনা সরিষা-৯ এর সম্প্রসারণের লক্ষে আয়োজিত মাঠ দিবস
অনুষ্ঠানে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, খুবি’র শিক্ষক ও বিনা’র গবেষকরা এসব
কথা বলেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাইকগাছার সহযোগীতায় রাজস্ব
অর্থায়নে বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট সাতক্ষীরার বিনেরপোতা
উপকেন্দ্র এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহন কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে মাঠ
দিবস অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি
গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহা-পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ
অতিথি ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা’র উপ-পরিচালক কৃষিবিদ
কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো টেকনোলজি বিভাগের
প্রফেসর ড. মোঃ সরওয়ার জাহান, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের
মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম, বিনা’র বৈজ্ঞানিক
কর্মকর্তা মশিউর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সমীরণ সাধু।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাস। উপ-
সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল আহমেদ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপ-
সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবদাস রায়, কমলেশ দাশ, রুবাইয়া খাতুন, নাহিদ
মল্লিক, তাপস সরকার, শামীম আফজাল ও কৃষক মোঃ হারুন । অনুষ্টান শেষে
কর্মকর্তা’রা কৃষক হারুন এর বিনা সরিষা-৯ এর ক্ষেত পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য
কৃষক হারুন এবছর প্রথম বারের মত তার চিংড়ী ঘেরের ৭০ বিঘা লবনাক্ত জমিতে
বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করেছে। কোন চাষ ছাড়াই তার সরিষার বাম্পার ফলন
হয়েছে। সম্ভবনার এ খবর মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়া পড়ায় এলাকার অন্যান্য
কৃষকরা এ ধরণের চাষাবাদে এগিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
https://www.kaabait.com