• রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:৪২
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ডিম আমদানি করছে রুশ গ্যাস স্টেশনে বিস্ফোরণ, মস্কো-কিয়েভ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জার্মানির শিল্প খাতে বাড়ছে চীনা প্রভাব, হুমকিতে কর্মসংস্থান-জিডিপি সেনাবাহিনী সুদানে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস পুনর্দখল করেছে তুরস্কে তৃতীয় দিনের মতো ব্যাপক বিক্ষোভ: বাড়ি বাড়ি অভিযান, আটক ৯৭ ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ পোস্টের পাকিস্তানে অভিযোগে সাংবাদিক আটক সহিংস অপরাধের বৃদ্ধি রোধে ব্যর্থতার জন্য পেরুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরখাস্ত ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ৩২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ যুক্তরাজ্যের নৌকা ডুবে ইন্দোনেশিয়ায় পর্যটক নিহত ইনজুরির কারণে মাঠে ফেরা হলো না ম্যাট হেনরির

পদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন

প্রতিনিধি: / ১৩৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪

অর্থনীতি: পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন। এই তথ্য জানিয়েছেন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে পদ্মা ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক একীভ‚ত হওয়ার বিষয় সমঝোতা চুক্তি সই করার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পদ্মা ব্যাংকে একীভ‚ত করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনও চাপ ছিল না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ ছিল। আমরা এটা করেছি দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে। পদ্মাকে একীভ‚ত করা হলেও আমানতকারীদের কোনও সমস্যা হবে না, সবাই নিরাপদে থাকবেন। পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন। তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো একীভ‚ত হলো বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। এর ফলে পরিচালনা পর্ষদে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন এক্সিম ব্যাংকের পরিচালকরা। দুই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সে বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে। পদ্মা ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তার চাকরি যাবে না। নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পদ্মায় জাল ফেলেছে এক্সিম ব্যাংক। এখন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার পালা। এক বছরের মধ্যে পদ্মা ব্যাংক ভালো হয়ে যাবে। চাইলে পদ্মা ব্যাংকের যে কোনও ব্যক্তিগত আমানতকারী তার টাকা এক্সিম ব্যাংক থেকেই তুলে নিতে পারবেন। পদ্মা ব্যাংকের সব দায়ভার এখন থেকে গ্রহণ করল এক্সিম ব্যাংক। এর আগে, গত ১৪ মার্চ সকালে ব্যাংকের পর্ষদ সভায় পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডকে অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় এক্সিম ব্যাংক। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি ‘দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড’ব্যাংকের নাম বদলে ‘পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড’হয়। ২০১৩ সালে এই ফারমার্স ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের কারণে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে এতে সরকারের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। ব্যাংকটিকে বাঁচাতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংক এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দেয়। সার্ব-অডিনেট বন্ড জারি ও স্থায়ী আমানত রাখার মতো অন্যান্য সহায়তার আকারেও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা পদ্মা ব্যাংকে বিনিয়োগ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। কিন্তু পদ্মা ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারায় সহায়তা দিয়েও ব্যাংকটির মূলধন ক্ষয় ঠেকানো যায়নি। বিপুল খেলাপি ঋণ, গ্রাহকের আমানত ফেরত দিতে না পারা এবং বড় লোকসান দিতে থাকায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে পদ্মা ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসান খসরু পদ্মা ব্যাংককে যেকোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভ‚তকরণ (মার্জার) বা অধিগ্রহণ (অ্যাকুইজিশন) করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব দেন। কিন্তু মার্জার অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন আর হয়নি। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পদ্মা ব্যাংক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ডেল মরগান অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে ব্যাংকটি। বলা হয়, ব্যাংকটিতে ৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ আনতে ডেল মরগান মধ্যস্থতা করবে। কিন্তু সেই অর্থও কখনও আসেনি। এদিকে বিনিয়োগ করে পাঁচ বছর পরেও কোনও রিটার্ন না পাওয়ায় ২০২৩ সালের ফেব্রæয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় আইসিবি। রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থাটি এখন তাদের পদ্মা ব্যাংকের শেয়ার বিক্রির জন্য দেশি-বিদেশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সন্ধান করছে। ২০২৩ সালের শেষে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণই ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। ফলে ঋণ থেকে যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে আমানতের সুদ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে জানান, আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভ‚ত করা হবে। এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক একীভ‚ত (মার্জার) করতে একটি রোডম্যাপ ঠিক করেছে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে এক বছর সময় দিয়ে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন’ বা পিসিএ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার, মূলধনের পর্যাপ্ততা, নগদ অর্থের প্রবাহ, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আর্থিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সূচক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সেই সূচকে কাঙ্ক্ষিত মানদÐের নিচে থাকা ব্যাংকগুলোকে ‘দুর্বল’ শ্রেণিভুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুর্বল ব্যাংক টেনে তোলার শেষ পদক্ষেপ হিসেবে অন্য ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভ‚ত করার বিষয়টি এসেছে। সরকারও তাতে সায় দিয়েছে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com