ধর্মপাতা: ইসলামে দাওয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি সুষ্ঠু-সুন্দর সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে যা করণীয়। তাহলো সমাজের প্রতিটি মানুষের ইসলামী অনুশাসন মেনে চলা। আর এ অনুশাসনের মাঝে রয়েছে- পরস্পর ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। একে অন্যের সমালোচনা না করা। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ইত্যাদি। মানুষ এ পৃথিবীতে শান্তিতে জীবন-যাপন করবে। কেউ কারও লাঞ্ছনার শিকার হবে না। কারও জান-মাল কারও দ্বারা বিনষ্ট হবেনা। কারও আব্রæ-ইজ্জত কারও দ্বারা নষ্ট হবে না। এটাই সমাজের চাওয়া-পাওয়া। ইসলাম এটাই শিক্ষা দেওয়ার জন্য যুগে-যুগে নবী-রসূলদের প্রেরণ করেছেন। হযরত আদম (আ.) থেকে আমাদের নবী হযরত রাসূলে আকরাম (স.) পর্যন্ত যত নবী-রসূল এ পৃথিবীর বুকে এসেছেন। প্রত্যেকের মিশন ছিল এক ও অভিন্ন। আর তা হলো প্রতিটি মানুষ যেন ফেরেশতার গুনে গুনান্বিত হয়। যেন জন্মের শুরু থেকে মানুষের হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা পশুত্বের আচরণের বিলুপ্তি ঘটে। বিদূরিত হয় তার অন্তর থেকে সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা। তার অন্তর যেন হয় নির্মল-নিষ্কলুষ স্বচ্ছ। সাদামাটা হবে। ধুরন্ধর-চালাক,প্রতারক-ধোকাবাজের কোন আচরণ পাওয়া যাবে না তার ভেতর। কপটতায় পূর্ণ থাকবে না তার হৃদয়। মনমানসিকতা হবে সাদামাঠা।একারণে হযরত রাসূলে আকরাম (স.) বলেছেন, মুমিনতো সে, যে হবে সাদাসিদা। আর পাপাচার হলো সে, যে হবে প্রতারক-ধোকাবাজ। এ জন্যে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সঠিকপথের দিশা দেয়ার জন্যে নাজিল করেছেন মহাগ্রন্থ আল কুরআন। যার প্রতিটি শব্দ প্রতিটি হরফের মাঝে রয়েছে সত্যের সোনালী পয়গাম। তাইতো মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের পরিচয় এভাবে তুলে ধরেছেন,”এই কুরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে” (সূরা বাণী ইসরাঈল :৯)। সমাজের এমন কতগুলো অপরাধ রয়েছে, যা কোন নির্দিষ্ট কোন ধর্মের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। বরং তার পরিব্যপ্তি রয়েছে সকল ধর্ম জুড়ে। সকল ধর্মেই এগুলো নিষিদ্ধ। যেমন, চুরি-ডাকাতি, হত্যা-লুণ্ঠন, মারামারি-হানাহানি, গিবত শোকায়েত, পরনিন্দা-চোগলখোরী, অন্যের সমালোচনা, প্রতারণা-চাঁদাবাজি ধর্ষণ, সন্ত্রাসী ইত্যাদি। এদিকে ইংগিত করে কুরআনে বহু জাগায় এর নিষেধাজ্ঞ এসেছে। কুরআন হতে পারে নিদৃষ্ট ধর্মের সাথে সীমাবদ্ধ। কিন্তু কুরআনে বর্ণিত এ নিষেধাজ্ঞ শুধু ইসলামের সাথে সীমাবদ্ধ নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, “মুমিনরা তো পরসপর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে ,যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম” (সূরা হুজরাত আয়াত:৯,১০)। (সংকলিত)
https://www.kaabait.com