বিনোদন: গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বিএফডিসির বাগানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদ্য নির্বাচিত কমিটির বিজয় উপলক্ষে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে শিল্পী সমিতির আমন্ত্রণে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ গ্রহণ করতে এসেছিলেন। তখন চিত্রনায়িকা ময়ূরী ও তার মেয়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণকে কেন্দ্র করে শিল্পী সমিতির সদস্য শিবা শানু দৈনিক খবরের কাগজের সাংবাদিক মিঠুন আল মামুনকে আঘাত করেন। মিঠুন আল মামুন নিজেকে বাঁচাতে চিৎকার করলে চারদিক থেকে সবাই ছুটে আসতে থাকেন। এই ঘটনার জেরে অনাহুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির কতিপয় নির্বাচিত সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের হামলা চালান। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এতে ক্ষুব্দ সাংবাদিকেরা ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও দোষী শিল্পীদের শাস্তি চেয়ে শিল্পী সমিতিকে ৫ দফা দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত মঙ্গলবার রাতেই প্রযোজক জনাব আরশাদ আদনানকে প্রধান উপদেষ্টা করে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয়, মাসুম জয় এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল, রতœাকে নিয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে গত বুধবার রাত ৯টায় এফডিসিতে অবস্থিত চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির স্টাডি রুমে তদন্ত কমিটি আলোচনায় বসে। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবুসহ বেশ কজন সাংবাদিক ও পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন, প্রযোজক নেতা মোহাম্মদ ইকবাল। সেখানে বসে আলোচনার মাধ্যমে সবাই ঘটনার সমাধান ও মীমাংসার জন্য নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত হয়-
১. ঘটনার দিনই চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ঘটনার জন্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছে।
২. শিবাশানু, সুশান্ত, জামানকে শিল্পী সমিতি থেকে এক মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। তাদের শোকজ নোটিশ দিয়ে ভবিষ্যতে কোনো উচ্ছৃঙ্খল কাজে জড়িত না হওয়ার জন্য সাবধান করা হবে।
৩. যত দ্রæত সম্ভব আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসা বাবদ ব্যয় বুঝিয়ে দেবে শিল্পী সমিতি।
৪. হামলার শিকার সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মোবাইলসহ নানা যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার ক্ষতিপূরণ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বুঝিয়ে দেবে শিল্পী সমিতি।
৫. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীকে ১ মাসের জন্য শিল্পী সমিতি থেকে ১ মাসের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়৷ একইসাথে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে সে যদি জড়িত হয় তবে সমিতি থেকে তার স্থায়ীভাবে সদস্যপদ স্থগিত করা হবে। অন ক্যামেরায় সে দু:খ প্রকাশ করেছে। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তার সফল সমাপ্তি ঘটেনি। গত শুক্রবার ১১ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির পুনরায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়গুলোর আনুষ্ঠানিক সমাধান সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাওয়ায় জয় চৌধুরীকে বিনোদন সাংবাদিকরা বয়কট করেছে। সেই ঘোষণা বহাল থাকবে। পাশাপাশি এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল চলচ্চিত্রের কালো দিবস পালন করবে বিনোদন সাংবাদিকরা৷
https://www.kaabait.com