আন্তর্জাতিক: গাজা থেকে প্রায় ২১ হাজার শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ সাহায্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। সোমবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে সংস্থাটি। এই প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে-নিখোঁজদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে, অনেকেই গণকবরগুলোতে সমাহিত হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের দ্বারা আটক হয়েছে কিংবা সংঘাতের বিশৃঙ্খলায় হারিয়ে গেছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, হামাস অধ্যুষিত ফিলিস্তিনের গাজা উপতক্যায় গত বছরের ৭ অক্টোবর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে হামাস সেনাদের পাশাপাশি মারা গেছে বেসামরিক লোকজনও। চলমান এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রেহায় মেলেনি নারী, শিশুরাও। এ পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেভ দ্য চিলড্রেন গাজায় নিখোঁজ শিশুদের বিষয়ে তদন্তের আহŸান জানিয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ের বিষয়টি প্রায় অসম্ভব। তবে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীবিহীন বা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর আনুমানিক ৪ হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ রয়েছে, গণকবরগুলোতেও অজানা সংখ্যকের ঠাঁই হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ১৪ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি অসংখ্য শিশু মারাত্মক অপুষ্টিরও শিকার হয়েছে। এসব শিশুর শরীরে কান্নার শক্তিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে গাজার নিখোঁজ শিশুদের নিয়ে স্বাধীন তদন্ত ও দায় খুঁজে বের করার আহŸান জানিয়েছেন সেভ দ্য চিলড্রেনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক জেরেমি স্টোনার। তিনি বলেন, পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনের হদিস নিয়ে অনিশ্চয়তায় জর্জরিত। কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানের মৃতদেহ খুঁজে বের করার জন্য ধ্বংসস্তূপ বা গণকবর খুঁড়তে পারছে না। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো শিশুই একা, অরক্ষিত থাকা উচিত নয়। কোনো শিশুকে আটক করা বা জিম্মি করাও উচিত নয়। গব বছরের নভেম্বরে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ গাজাকে শিশুদের কবরস্থল বলে আখ্যা দিয়েছিল। চলতি বছরের মে মাসে ইউনিসেফ বলেছিল, গাজায় শিশুদের জন্য নিরাপদ কোনো স্থান নেই। শিশুরা যুদ্ধে সর্বোচ্চ মূল্য দিচ্ছে। জুন মাসে ইউনিসেফ বলেছিল, গাজায় ৯০ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং তাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ ঝুঁকিতে রয়েছে।
https://www.kaabait.com