• বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৬

‘খলনায়ক’ ইয়াশ দায়ালই বেঙ্গালুরুরের নায়ক

প্রতিনিধি: / ৪৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

স্পোর্টস: শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৫ রান। তবে চেন্নাই সুপার কিংসের মূল্য লক্ষ্য আসলে এর অর্ধেকেরও কম। ৬ বলে ১৭ করলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের প্লে অফে খেলা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জোর্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি বল তুলে দিলেন ইয়াশ দায়ালের হাতে। বাঁহাতি পেসার ওভারের প্রথম বলটি করলেন লো ফুলটস। মাহেন্দ্র সিং ধোনি সপাটে চালিয়ে দিলেন ব্যাট। বল আছড়ে পড়ল গ্যালারিতে। গত মৌসুমের স্মৃতিও যেন উঁকি দিতে শুরু করল! গত আইপিএলে দায়াল ছিলেন গুজরাট টাইটান্সে। শেষ ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের যখন প্রয়োজন ২৯ রান, বোলিংয়ে আনা হয় তাকে। ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন উমেশ ইয়াদাভ। পরের পাঁচ বলে টানা পাঁচ ছক্কায় কলকাতাকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেন রিঙ্কু সিং। আইপিএল তো বটেই, ক্রিকেটের ইতিহাসেই অবিস্মরণীয় ম্যাচ সেটি। কিন্তু দায়ালের জন্য সেটি ছিল অনাকাক্সিক্ষত এক রাত, দুঃস্বপ্ন হয়ে যা হানা দেয় প্রায়ই। এবার যখন প্রথম বলে সেই দায়াল হজম করলেন ছক্কা, গতবারের সেই স্মৃতি ফিরে আসাই স্বাভাবিক। শঙ্কায় তার কাবু হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। বেঙ্গালুরু তখন যেন স্বপ্নভঙ্গের দুয়ারে, প্লে অফে পৌঁছে যাওয়ার আশা উজ্জ্বল চেন্নাইয়ের। ৫ বলে ১১ রানের সমীকরণ তো এই যুগে নস্যি। কিন্তু দায়ালের হৃদয়ে ছিল হয়তো অন্য প্রতিজ্ঞা। এটিকেই দেখেছিলেন হয়তো সুযোগ হিসেবে, সেই পাঁচ ছক্কার যন্ত্রণাকে চাপা দেওয়ার সুযোগ। ওভারের দ্বিতীয় বলে আরেকটি বড় শটের চেষ্টায় ধোনি আউট ১৩ বলে ২৫ রান করে। পরের বলটি দায়াল করলেন ¯েøায়ার, ¯্রফে ১০৬ কিলোমিটার গতির। শার্দুল ঠাকুর ব্যাটে-বলেই করতে পারলেন না। চতুর্থ বলে ব্যাটের কানায় লেগে একটি রান নিতে পারলেন শার্দুল। দুই বলে প্রয়োজন তখন ১০ রান। তখনও খুবই সম্ভব। স্ট্রাইকে ফিরেছেন রবীন্দ্র জাদেজা, ২০ বলে ৪২ রান করে যিনি তখন ক্রিজে। আর দায়ালের তো এসব মুহূর্তে ভেঙে পড়ার অভিজ্ঞতা আছেই! কিন্তু দায়াল এবার হয়ে উঠলেন বাধার দেয়াল। ওভার পঞ্চম বলটিও তিনি করলেন ¯েøায়ার। জাদেজা ব্যাটেই লাগাতে পারলেন না। বিষম ভার যেন নেমে গেল দায়ালের। ম্যাচ তখনও শেষ হয়নি, কিন্তু তিনি উদযাপন শুরু করলেন ডানা মেলে ভাসতে ভাসতে। ছোট্ট উদযাপনের পর ম্যাচের শেষটাও দারুণ করলেন তিনি। আরও একটি ¯েøায়ার এবং আবারও ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ জাদেজা। এবার উদযাপন হলো বুনো, খ্যাপাটে, বাঁধনহারা। সেখানে দায়ালের সঙ্গী দু প্লেসি, ভিরাট কোহলিসহ বেঙ্গালুরুর সবাই। যে দল প্রথম আট ম্যাচের সাতটিতে হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে ছিল, আর একটি ম্যাচে হারলে আনুষ্ঠানিক বিদায়ও হয়ে যেত, সেই দলই অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা ছয় জয়ে নাটকীয়ভাবে পৌঁছে গেল প্লে অফে। ৫৪ রানের ইনিংসের সঙ্গে চোখধাঁধানো এক ক্যাচ নিয়ে এ দিন ম্যাচ সেরা হন ফাফ দু প্লেসি। কিন্তু বেঙ্গালুরু অধিনায়ক বললেন, তার চোখে ম্যাচ সেরা ইয়াশ দায়াল। “শেষ দিকে একটু বেশিই কাছাকাছি চলে গিয়েছিলৃ এমএস (ধোনি) ছিল ক্রিজে, মনে হচ্ছিল, ‘এভাবে আবার চলে যেতে দিতে পারি না’ৃ এসব পরিস্থিতিতে সে এতবার সফল হয়েছেৃ.! তবে আজকে আমরা শেষ সময়টায় যেভাবে বোলিং করেছি ভেজা বল নিয়ে ৃ আমরা কয়েক বার চেষ্টা করেছি বল বদলাতে। বোলারদের জন্য কাজটা ছিল খুবই কঠিন।” “আমার মতেৃ আমি এই ম্যান অব দা ম্যাচ উৎসর্গ করতে চাই ইয়াশ দায়ালকে। আজকে সে যেভাবে বল করেছে, অবিশ্বাস্য ছিল তা। তার জন্য এই ভ‚মিকাটা অনেকটাই নতুন। কিন্তু যেভাবে সে শেষ সময়ের চাপ সামলেছে, ম্যান অব দা ম্যাচ তারই প্রাপ্য।” দু প্লেসি জানালেন, একের পর এক ¯েøায়ার ডেলিভারি করা তাদের পরিকল্পনারই অংশ ছিল। “আমি তাকে বলেছিলাম, এই উইকেটে গতি কমিয়ে নেওয়াই সেরা বিকল্প। বলেছিলাম, ‘নিজের স্কিলে ভরসা রাখো। খুব ভালো বল করছো, সময়টা উপভোগ করো। এই মুহূর্তগুলির জন্যই তো এত অনুশীলন, এত পরিশ্রম করো।’ সে প্রথম বলটি ইয়র্ক করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পুরো রাতেই ইয়র্কার খুব একটা কাজে দেয়নি। তাকে তখন বললাম গতি কমাতে এবং সে অবিশ্বাস্যরকমের ভালো করেছে।” ফাইনালেল লড়াইয়ে টিকে থাকার চেষ্টায় আগামী বুধবার এলিমিনেটর ম্যাচে খেলবে বেঙ্গালুরু, প্রতিপক্ষ এখনও চ‚ড়ান্ত হয়নি।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com