স্পোর্টস: পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে সঞ্চালক মুরালি কার্তিক জিজ্ঞেস করলেন, “এবারের মৌসুমে বা এই আইপিলে কী কী আপনি করছেন?” ভিরাট কোহলি হাসতে হাসতে বললেন, “স্পিনারদের জন্য সুইপ কাজে লাগাচ্ছি এবার।” সুইপ ক্রিকেটের খুবই পরিচিত ও নিয়মিত এক শট। এখানে হাসির কিছু এমনিতে নেই। কিন্তু কোহলির ব্যাটিং অনুসরণ করে থাকলে হাসির কারণটাও সহজে অনুমেয়। সুইপ সুইপের প্রতি অনুরাগ যে তার খুব একটা নেই! পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার ৪৭ বলে ৯২ রানের ইনিংসটির পথে রাহুল চাহার ও লিয়াম লিভিংস্টোনের স্পিনে এই শট বেশ কিছু খেলতে দেখা গেছে কোহলিকে। এই শটে তার ব্যাট থেকে এসেছে এ দিন ২৬ রান। কিছুদিন আগে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৭০ রানের ইনিংসের পথেও রাশিদ খান, নূর আহমাদ, সাই কিশোরদের স্পিনে সুইপ-¯øগ সুইপ প্রচুর খেলেছেন কোহলি। কোহলির মতো ব্যাটসম্যান যখন ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করেন, সেটির পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ ও গভীর ভাবনা থাকেই। তিনি নিজেই জানালেন, মূলত মাঝের ওভারগুলোয় স্ট্রাইক রেটের দাবি মেটাতেই এই পথ তিনি বেছে নিয়েছেন। এবারের আইপিএলে কোহলির স্ট্রাইক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল বেশ। তিনি সেটি উড়িয়ে দিয়েছেন, কথায় যেমন, তেমনি ব্যাটেও। এবারের আসরে এখনও পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬০০ রান করেছেন তিনি (৭০.৪৪ গড়ে ৬৩৪)। স্ট্রাইক রেট ১৫৩.৫১। তার ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেটের চেয়ে যা প্রায় ২০ বেশি। এমনকি কোহলির যে মৌসুমটি কিংবদন্তি হয়ে আছে আইপিএলের ইতিহাসে, ২০১৬ সালে চার সেঞ্চুরিতে ৯৭৩ রান করার সেই আসরেও তার স্ট্রাইক রেট ছিল এবারের চেয়ে কম (১৫২.০৩)। কোহলি জানালেন, স্ট্রাইক রেটের কথা ভেবেই নিজের পুরোনো ঝোলা থেকে ¯øগ সুইপ শট বের করে এনেছেন তিনি। যদিও অনুশীলন করেননি বলেই দাবি তাার। “স্পিনারদের জন্য ¯øগ সুইপ কাজে লাগাচ্ছি এবার (হাসি)। মানসিকভাবে নিজেকে ¯্রফে ওই জায়গাটায় নিয়ে গেছি, একদমই অনুশীলন করিনি। তবে জানতাম যে, এই শট খেলতে পারব। কারণ অতীতে অনেক খেলেছি এটা।” “আমার মনে হচ্ছিল, আরেকটু ঝুঁকি নিতে পারি এবং এই শট একটা সময় নিয়মিতই খেলতাম। আবার খেলা শুরু করলাম এবং এতে যেটা হয়েছে, ব্যাক ফুটেও আমাকে শট খেলতে সহায়তা করছে এটা। কারণ স্পিনের বিপক্ষে ওই দিকটা (ইশারায় অন সাইড দেখিয়ে) সবসময় কাজে লাগানোর সুযোগ খুঁজতে পারছি।” ¯øগ সুইপ ঠিকঠাক খেলতে পারলে রান তোলার পাশাপাশি স্পিনারদের লেংথ এলোমেলো করে দেওয়া যায়। আরও আলগা বল পাওয়ার সুযোগও তাই তৈরি হয়। কিন্তু ঠিকঠাক না হলেই বিপদ। আউট হওয়ার ঝুঁকি এখানে থাকে সবসময়ই। কোহলি বললেন, মানসিকভাবে সেই ভয়কে জয় করেই এখনও পর্যন্ত সফল তিনি। “এবারের আইপিএলে আমার জন্য এটা বিরাট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটা ¯্রফে আরেকটু দৃঢ় বিশ্বাস রাখা ও আউট হয়ে যাওয়ার ভয়টা সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপার। ‘যদি আউট হয়ে যাই, তাহলে কী হবে’, এই ভাবনাটাকে এবারের আইপিএলে দূরে রাখতে পেরেছি আমি এবং এটা আমাকে সহায়তা করেছে এই আইপিএলে মাঝের ওভারগুলায় স্ট্রাইক রেট ধরে রাখতে, দলের জন্যও স্কোরিট রেট ভালো রেখে যেতে।”
https://www.kaabait.com