সরকারি চাকরিতে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরানোর সিদ্ধান্তে সরকারের কোনো হাত নেই বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, “শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে আন্দোলন করছে, সে সিদ্ধান্ত সরকারেরই ছিল চলমান। আমরা তো এ সিদ্ধান্ত দেইনি, দিয়েছেন আদালত। তার পরও আমরা আমাদের দেশের ব্যাপার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।” রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। আবেদনের চ‚ড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা যেই ইস্যুতে আন্দোলন করছে সেটা (কোটা বাতিল) তো সরকারেরই সিদ্ধান্ত ছিল, আদালত ভিন্ন রায় দিয়েছে। আদালতের ব্যাপারটা আপিল বিভাগে আছে। “বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তো আমার কথা বলা উচিত নয়। এটা এখন আদালতের এখতিয়ার।” এদিকে সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য ‘প্রত্যয়’ নামে একটি স্কিম চালু করেছে সরকার। কিন্তু তাতে যুক্ত হলে অবসর পরবর্তী আর্থিক সুবিধা কমে যাওয়ার শঙ্কায় ১ জুলাই থেকে আন্দোলনে নেমেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা। পেনশন স্কিম ও কোটা নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থবিরতা চলছে, এ নিয়ে সরকারের ভাবনা কী-এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো সমাধান হয়ে যাবে, আমি বিশ্বাস করি।” শিক্ষকদের সঙ্গে শিগগির বৈঠকে বসবেন কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। বসাবসিটা কখন হবে, সেটা আমি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে সময়মতো সমাধান হবে।” শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী এবং শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন বিরোধী আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। দলটি দাবি করেছে, সরকার আদালতকে ব্যবহার করে কোটা ফিরিয়ে এনেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি ও সমমনা দল নিজেরা পারে না, আজকে তারা পরজীবী আন্দোলন করছে। “এটাকে তাই বলতে হবে- কোটার ওপর ভর করেছে, পেনশনের ওপর ভর করেছে। নিজেরা ব্যর্থ, অন্যান্যের ওপর ভর করে আজকে শিকার করতে চায়। তারা স্বপ্ন দেখছে তো, দিবাস্বপ্ন।”
https://www.kaabait.com