কপিলমুনি (খুলনা) অফিস: খুলনার সিআইডি (এসআই) অমিতাভ সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত একটি পরিবারের সংবাদ সম্মেলন শনিবার সকাল ১০ টায়
উত্তর সলুয়া গ্রামের সুকুমার কর্মকারের পুত্র পলাশ কর্মকার তার নিজস্ব বাস ভবনে সাংবাদিক, গ্রামবাসী, পাড়াপ্রতিবেশী, জনপ্রতিনধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।সংবাদ
সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে পলাশ কর্মকার বলেন , ১৯৯৫সালে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির এর নিজস্ব দোকান ঘর ভাড়া দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলে শর্তানুযায়ী নগদ এক কালীন পঞ্চাশ হাজার টাকা স্কুলকে দিলে আমার ঠাকুর দাদা গোষ্ঠ বিহারী কর্মকারের নামে পঞ্চাশ টাকার ননজুডিশিয়াল সট্যাম্পে লিখিতভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ১০/১২/৯৫ হালে ২৯ নং দোকান ঘরটি
বরাদ্দ দেয় । পরবর্তীতে আমার ঠাকুরদাদা ১৬/০৯/৯৯ তারিখে আমার পিতা সুকুমার চন্দ্র কর্মকারকে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল সট্যাম্পে লিখিত ভাবে দোকান ঘরটি হস্তান্তর করেন ।
আমার ঠাকুর দাদা আমার বাবাকে দোকান ঘরটি হস্তান্তর করার পর ঠাকুর দাদা ১৭ বছর জীবিত ছিলেন । তাঁর জীবদ্দশায় আমার কাকা পঙ্কজ কর্মকার উক্ত দোকান ঘরের কোন মালিকানা বা
অংশীদারিত্বের দাবী করেননি। এমনকি দোকান ঘরটি ভাড়া নেওয়ার আগে জামানতের পঞ্চাশ হাজার টাকা আমার বাবার দেওয়া ছিল এ বিষয়টি আমার ঠাকুর দাদা বহুবার পঙ্কজ কর্মকারকে
জানিয়েছিলেন । শুধু পঙ্কজ কর্মকার নয়, বিষয়টি আমাদের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা জানেন । তিনি আরও বলেন , আমার ঠাকুর দাদা গোষ্ঠ বিহারী কর্মকার ১/১/২০১৬
সালে মৃত্যুর পর আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে আমার কাকা পঙ্কজ কর্মকারের সাথে আমার বাবার বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে পঙ্কজ কর্মকার হঠাৎ
উক্ত দোকান ঘরের অর্ধেক মালিকানা দাবী করে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দিরের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করেন । এর প্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ম্যানিজিং কমিটি, সানীয় গণ্যমান্য
ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শুনানী ও তদন্ত করেন ১০/০৮/২২ তারিখে আমার বাবার মালিকনার বৈধতার প্রতিবেদন প্রদান করে । পরবর্তীতে একই দাবিতে পঙ্কজ কর্মকার স্কুলের সভাপতি জেলা
প্রশাসক খুলনা বরাবর লিখিত আবেদন করেন । আবেদনটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে জেলা প্রশাসক মহোদয় পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন
। তৎকালীণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম তাঁর দপ্তরে দীর্ঘ শুনানী ও তদন্ত শেষে দোকান ঘরটির সম্পূর্ণ ও একক মালিকানা হিসাবে আমার বাবা সুকুমার চন্দ্র কর্মকারের পক্ষে ৩১/০৮/২২ ইং তারিখে রায় দেন । লিখিত বক্তব্যে পলাশ কর্মকার আরও বলেন , পঙ্কজ কর্মকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের হয়রানী ও নাজেহাল করার লক্ষ্যে আমার ঠাকুর দাদার স্বাক্ষর জাল করার মিথ্যা
অভিযোগ এনে আমার বাবাসহ ২ জন নিরীহ সাক্ষীকে বিবাদী করে ৩০/১১/২২ তারিখে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন । মামলা নং সি আর ১৩২৩/২২। এ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে খুলনা মেট্রো এন্ড জেলা সিআইডিথর উপ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) অমিতাভ সন্যাসী (বিপি ৯১১৯২২৩১৯৫) দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। একদিন উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অমিতাভ সন্যাসী কপিলমুনিস আমার
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাসন্তী জুয়েলার্সের্ এসে তার নিজের পরিচয় দিয়ে আমার বাবার বিরুদ্ধে করা মামলাটির বিষয়ে কথা বার্তা বলেন । এভাবে বিভিন্ন সময়ে ৩ বার তিনি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসেন । গত ১৪/১১/২৩ ইং তারিখে এস আই অমিতাভ সন্যাসী
আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে আমাকে বলেন যে , আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিলে তদন্ত রিপোর্ট আপনার বাবার পক্ষে দেওয়া হবে অন্যথায় এ মামলায় আপনার বাবাসহ ২জন বিবাদী
নিশ্চিত সাজা ভোগ করবে বলে নানা রকম ভীতিকর কথা বলেন । আমাদের সামাজিক, পারিবারিক, ব্যবসায়িক সুনাম রক্ষার্থে এবং হয়রানীর হাত থেকে রেহাই পেতে আমি এস আই অমিতাভ
সন্ন্যাসীকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা প্রদান করি। টাকা দেওয়া সময় আমার জুয়েলার্স এর কর্মচারী তালা থানার গোণালী গ্রামের মধুসূদন আঢ্যথর ছেলে মেঘনাথ আঢ্য ও তালা থানার গুনা গ্রামের মৃত চিত্তরঞ্জন সরকারের ছেলে জুয়েলারি ব্যবসায়ী প্রদীপ সরকার উপসিত ছিলেন ।
ওই টাকাগুলো দেওয়ার কিছু দিন পর এস আই অমিতাভ সন্যাসী আরো ৩০ হাজার টাকা দাবী করলে আমি দিতে রাজি না হওয়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে এস আই অমিতাভ সন্যাসী এ মামলায় মিথ্যা
মনগড়া ও পক্ষপাতমূলক তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। যার ফলশ্রুতিতে ২১/১১/২৪ তারিখে আমার বাবাসহ বিবাদী নিরীহ ডাঃ গোপাল চন্দ্র দাশ গ্রেফতার হয়ে হাজত বাস করছেন। তবে ডাঃ
গোপাল চন্দ্র দাশ ১৮/১২/২৪ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ মামলায় অন্য বিবাদী নিরীহ অর্জুন মন্ডল গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, পঙ্কজ কর্মকারের স্বাক্ষর জালের
অভিযোগটি চূড়ান্ত পরীক্ষার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উপকরণ খুলনা বিভাগীয় ফরেনসিক ল্যাবে সরবরাহ
করতে ব্যর্থ হওয়ায় ফরেনসিক ল্যাব কর্তৃক তদন্ত কর্মকর্তা এস আই অমিতাভ সন্যাসীর দেয়া দলিলপত্রাদি তাকে ফেরৎ দেন। কিন্তু ফরেনসিক বিভাগের এ বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তা তার
প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন নাই। এমনকি আমার বাবার পক্ষে আসা স্কুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রায়ের বিষয়টিও তিনি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেননি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন , উক্ত ঘুষখোর এস আই অমিতাভ সন্যাসীর সাথে
পঙ্কজ কর্মকারের রয়েছে গভীর সখ্যতা। ওই অফিসারকে দিয়ে পঙ্কজ কর্মকার আমাদেরকে নানাভাবে ক্ষতি ও হয়রানী করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে । ০২/০৬/২৪ তারিখে রামপ্রসাদ কর্মকার
আমার ও আমার বাবার নামে পাইকগাছা থানায় একটি মিথ্যা জিডি করেছে । নানান অপকর্মের হোতা পঙ্কজ কর্মকার ও তার ছেলে রামপ্রসাদ কর্মকার মিথ্যা মামলা ও জিডি করে ক্ষ্যান্ত হয়নি, তারা আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে । তাদের অব্যাহত হুমকিতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি। ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক ওই দুর্নীতিবাজ সিআইডির এস আই অমিতাভ সন্যাসীর ঘুষ, দূর্নীতি, পক্ষপাতিত্ব ও
স্বেচ্ছাচারিতার জন্য তিনি সিআইডির এডিশনাল আইজিপি ঢাকা ও সিআইডির জেলা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত সিআইডিথর এস
আই অমিতাভ সন্যাসী বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন তদন্ত প্রতিবেদনটা তার বিপক্ষে যাওয়ার কারণেই আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে ।
https://www.kaabait.com