বিদেশ : দু’দিনের মধ্যে পণবন্দীদের মুক্তি দেয়া না হলে গাজাবাসীর জন্য ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল। বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন। তার এই হুমকিকে পরোয়া করছে না বলে পাল্টা জবাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও। এতে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও চুক্তিটি টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আগামীকাল শনিবারে তিন ইসরাইলি পণবন্দীকে মুক্ত করে দেয়ার কথা রয়েছে। তবে স্থানীয় সময় গত সোমবার এক বিবৃতিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আর কোনো ইসরাইলি পণবন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে না বলে জানান হামাসের সামরিক শাখা কাশেম ব্রিগেডের এক মুখপাত্র। হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি লঙ্ঘন’ বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। হামাসকে হুমকি দিয়ে গত মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাস যদি জিম্মি মুক্তির সময়সীমা মেনে না চলে তাহলে ‘তীব্র লড়াই’ শুরু করবে ইসরাইল।” নেতানিয়াহু আরো বলেন, তিনি গাজার ভেতরে ও আশপাশে ইসরাইলি বাহিনীকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরই গাজা সীমান্তবর্তী ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো ও রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। এ ছাড়াও হামাসের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সোমবার হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবারের মধ্যে বন্দীবিনিময় সম্পন্ন না করা হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হওয়া উচিত।’ তবে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর হুমকিকে উড়িয়ে দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার হামাসের এক নেতা সব ধরনের হুমকি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘কেবল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চললেই গাজা থেকে পণবন্দীদের ফেরত নিতে পারবে ইসরাইল।’ এ পরিস্থিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো চুক্তি বজায় রাখতে তৎপরতা শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিসরে অবস্থান করছে। এই আলোচনায় সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিসরীয় কর্মকর্তা বলেন, ইসরাইল ও গাজা একটি সমঝোতায় আসতে চলেছে। গাজায় আরো বেশি তাঁবু, আশ্রয়কেন্দ্র ও ভারী সরঞ্জাম পাঠানোতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল। হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাওই বলেন, শনিবার তিন ইসরাইলি বন্দীর মুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইতিবাচক ইঙ্গিত’ রয়েছে। তবে চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে ইসরাইলের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা তারা পাননি। অপরদিকে, চুক্তি বজায় রাখার এই চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইলের কর্মকর্তারা।
সূত্র : এপি/ইউএনবি
https://www.kaabait.com