আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানে ২০২২ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে নিখোঁজ হওয়া ১৬ বছর বয়সী নিকা শাকারামি নিরাপত্তা বাহিনীর হয়ে কাজ করা তিনজনের হাতে যৌন নিপীড়ন এবং হত্যার শিকার হয়েছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর ফাঁস হওয়া একটি নথিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য শাকারামি নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর একটি মর্গে তার মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছিল পরিবার। ইরান সরকার সে সময় শাকারামি আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছিল বিক্ষোভের সঙ্গে শাকারামির মৃত্যুর ঘটনায় যোগসূত্র থাকার কথা অস্বীকার করেছিল ইরান সরকার। ঘটনাটির সরকারি তদন্ত হয় এবং সেই তদন্ত প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল যে, শাকারামি আত্মহত্যা করেছে। তবে এতদিন পর ফাঁস হওয়া নথি বলছে, ঘটনাটি আত্মহত্যা ছিল না। নথিটি ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ হিসেবে চিহ্নিত করা। এতে মূলত শাকারামির মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে হওয়া একটি মামলার শুনানির সারাংশ উল্লেখ করা হয়েছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ওই শুনানি করেছিল নথিটিতে শাকারামির হত্যাকারীদের নাম এবং যে জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা সত্য লুকাতে চেয়েছিলেন তাদের নামও উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া, নিরাপত্তায় নিয়োজিত একটি ভ্যানের ভেতরে শাকারামির সঙ্গে কি কি ঘটেছিল এবং কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনাও রয়েছে নথিতে বলা হয়, ভ্যানের ভেতরে একজন নিরাপত্তাকর্মী শাকারামির উপর বসে তার শ্লীলতাহানি করে। সে সময় হাতে হাতকড়া থাকার পরও পাল্টা লড়াই করেছিলেন শাকারামি। এতে ওই নিরাপত্তাকর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে শাকারামিকে লাঠিপেটা করে সরকারি নথির নামে ইরানে অসংখ্য ভুয়া নথি প্রকাশ পায়। ফলে, এই নথিও জাল কিনা তা নিশ্চিত হতে বিবিসি কয়েকমাস ধরে একাধিক উৎসের সঙ্গে আলোচনা ও গবেষণা করেছে। এই যাচাই প্রক্রিয়ায় দেখা গেছে, শাকারামিকে নিয়ে ফাঁস হওয়া নথিতে তার শেষ সময়ের গতিবিধির উল্লেখ আছে বিক্ষোভকারী নিকা শাকারামি নিখোঁজ হওয়া এবং তার মৃত্যুর খবর ইরানে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ইরানে নারীদের আরও স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের কাছে শাকারামি লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন শাকারামির মৃত্যুর এ ঘটনার কয়েকদিন আগেই ইরানে ‘দ্য উইমেন, লাইফ, ফ্রিডম মুভমেন্ট’ নামের এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল মূলত ২২ বছর বয়সী তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের একটি সত্য-অনুসন্ধান মিশনের তদন্তে দেখা গেছে, পুলিশ হেফাজতে থাকার সময় আঘাতের কারণে মাশা মারা যান। হিজাব ঠিকমত না পরার অভিযোগে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল
https://www.kaabait.com