• শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬

আবু হায়দারের ৭ উইকেট, ৪০ রানেই শেষ প্রতিপক্ষ

প্রতিনিধি: / ৫১ দেখেছেন:
পাবলিশ: শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্পোর্টস: আবু হায়দারের স্টাম্পে থাকা ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারলেন না ইকবাল হোসেন। বল প্যাডে আঘাত করতেই জোরাল আবেদন, কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। শেষ উইকেট হারাল গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি। ইনিংসের দৈর্ঘ্য তখন মোটে ১২ ওভার, স্কোরবোর্ডে রান স্রেফ ৪০! ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের নবম রাউন্ডে গাজী টায়ার্সকে গুঁড়িয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেছেন আবু হায়দার। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শনিবার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার স্রেফ ২০ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। মোহামেডানের দুই বোলার আবু হায়দার ও নাসুম আহমেদ ছাড়া আর কাউকে বোলিং করতে হয়নি। আবু হায়দারের সমান ৬ ওভারে সমান রান খরচায় ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। আবু হায়দারের আগুনে বোলিংয়ের দিনে মোহামেডান পেয়েছে উড়ন্ত জয়। ৪১ রান তাড়ায় ৯ উইকেটে জিতে গেছে তারা ৬.২ ওভারে। সব মিলিয়ে ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ ১৮.২ ওভারেই। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এক ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার আবু হায়দার। ২০১৭-১৮ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ৪০ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন গাজী গ্রæপের তরুণ পেসার ইয়াসিন আরাফাত। এছাড়া ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১৭ রানে ৭ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। ২০১৬ সালে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৫৮ রানে ৭ উইকেট নেন আবাহনীর বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিব। ২০১২ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে কুয়ালা লামপুরে কাতারের বিপক্ষে সৌম্য সরকারের ডাবল সেঞ্চুরির ম্যাচে ১০ রানে ৯ উইকেট শিকার করেছিলেন আবু হায়দার। তবে সেটা লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ ছিল না। দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে গাজী টায়ার্সের চেয়ে কম রানের গুটিয়ে যাওয়ার নজির আছে দুটি। ২০০২ সালের জাতীয় ক্রিকেট লিগের ওয়ানডে সংস্করণে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ৩০ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম বিভাগ। ২০১৩ সালে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ক্রিকেট কোচিং স্কুলকে ৩৫ রানে অল আউট করে আবাহনী। একটি জায়গায় অবশ্য রেকর্ড গড়েই ফেলেছে গাজী টায়ার্স একাডেমি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের কোনো দলের সংক্ষিপ্ততম ইনিংস তাদের এই ১২ ওভারে অল আউট হওয়া। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েই যেন নিজেদের বিপদ ডেকে আনে গাজী টায়ার্স। দ্বিতীয় ওভারে আশিকুর রহমানকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন আবু হায়দার। একই ওভারে ইফতেখার হোসেনকে ফেরান ২৮ বছর বয়সী পেসার। পরের ওভারেও আবু হায়দার নেন ২ উইকেট। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডবিøউ হন হাফিজুর রহমান। পায়ের ওপরের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন গাজী তাহজিবুল ইসলাম। অষ্টম ওভারে আশরাফুল আলমের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে স্রেফ ৩ রানে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ৫ উইকেট পূর্ণ করেন আবু হায়দার। অন্য প্রান্তে নাসুমও ৩ উইকেট নিলে পাওয়ার প্লের মধ্যে স্রেফ ২৩ রানে ৮ উইকেট হারায় গাজী টায়ার্স। তখনও তারা ছিল চট্টগ্রাম বিভাগের চেয়েও কমে অলআউট হওয়ার শঙ্কায়। ইফতেখার সাজ্জাদ ১১ বলে ১৬ রানের ইনিংসে দলকে ৪০ পর্যন্ত নিয়ে যান। দ্বাদশ ওভারে ইকবালের আগে সাজ্জাদকেও এলবিডবিøউ করেন আবু হায়দার। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ৬.২ ওভারে ম্যাচ জিতে নিয়েছে মোহামেডান। দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে বেশি বল (২৬২) বাকি থাকতে জয়ের রেকর্ড। ২০০২ সালে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২৬১ বল বাকি থাকতে জেতে সিলেট। ১২ বলে ১২ রান করে রনি তালুকদার বোল্ড হওয়ায় ১০ উইকেটের জয় পায়নি মোহামেডান। ২১ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন ইমরুল কায়েস। ম্যাচ সেরা যে আবু হায়দার, এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। চলতি মৌসুমে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন আবু হায়দার। প্রিমিয়ার লিগে দুই ম্যাচ আগেই ঝড়ো ফিফটির সঙ্গে একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরা হয়েছেন তিনি প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ জয়ে। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ জয়ের ম্যাচেও ৩৬ বলে ৪৫ রান করার পাশাপাশি উইকেট নিয়েছিলেন একটি। রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। লিগের তার উইকেট সব মিলিয়ে ২০টি। এর আগে বিপিএলেও মৌসুমে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১২ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট, এবারের আসরের যা ব্যক্তিগত সেরা বোলিং। আবু হায়দারের কীর্তিময় দিনে লিগের নবম ম্যাচে সপ্তম জয় পায় মোহামেডান। পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে গেছে তারা। দুই জয়ে ৯ নম্বরে গাজী টায়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ১২ ওভারে ৪০ (আশিকুর ০, মহব্বত ৫, ইফতেখার হোসেন ০, আশরাফুল ১, হাফিজুর ৫, তাহজিবুল ০, শামিম ৪, ইফতেখার সাজ্জাদ ১৬, মেহরাব ৩, আরিদুল ৪*, ইকবাল ০; নাসুম ৬-১-২০-৩, আবু হায়দার ৬-১-২০-৭)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৬.২ ওভারে ৪১/১ (ইমরুল ১৯*, রনি ১২, মাহিদুল ৫*; ইকবাল ২-০-১৫-০, মেহরাব ২.২-০-৭-০, ইফতেখার সাজ্জাদ ১-০-১১-০, আরিদুল ১-০-৪-১)
ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: আবু হায়দার


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com